Home জাতীয় জুলাই আন্দোলনকে ‘মানি মেকিং মেশিন’ বানানো হয়েছে- উমামা
জাতীয়রাজনীতি

জুলাই আন্দোলনকে ‘মানি মেকিং মেশিন’ বানানো হয়েছে- উমামা

Share
Share

জুলাই আন্দোলনকে টাকা তৈরির যন্ত্র বানিয়ে ফেলা হয়েছে বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা মন্তব্য করেছেন।

গত রবিবার রাতে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বলেছেন, ‘জুলাই অনেক বড় অভিজ্ঞতা। মানুষ অবিশ্বাস্য লড়াই করেছে। আমার মাথায় আসেনি যে, এটা দিয়ে টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায়! আমি মুখপাত্র হওয়ার পর আবিষ্কার করেছি, এটা দিয়ে অনেকে অনেক কিছু করছে। টেন্ডার-বাণিজ্য, তদবির-বাণিজ্য করছে, ডিসি নিয়োগ করছে।’
‘ অহরহ এগুলো করেছে। এর আগে এটা নিয়ে ধারণা ছিল না । তাহলে হোয়াই ইন দ্য আর্থ এটাকে আমি একটা মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করতে যাব? কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয়েছে। খুবই কমন, খুবই রেগুলার বেসিসেই হয়েছে।’

গত ২৭ জুন নানা অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান উমামা ফাতেমা । ওই সময় সংগঠনটির মুখপাত্রের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। রবিবার রাতের লাইভে উমামা সেই প্রসঙ্গও টানেন।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে থাকাটা তার জীবনের একটা ‘ট্র্যাজিক’ ঘটনা ছিল।

২ ঘণ্টা ২৪ মিনিটের লাইভে উমামা বলেন, ‘৫ আগস্টের পরদিন সকালবেলা থেকেই দেখি, সমন্বয়ক পরিচয়ে নাকি এক একজন এক এক জায়গায় গিয়ে দখল করছে! আমি এক রকম অবাক হয়ে যাই যে, গতকাল পর্যন্ত তো সমন্বয়ক পরিচয়টা দিতেই চাইছিল না। আর আজ থেকে শুনছি, সমন্বয়ক পরিচয়ে সবাই চাঁদাবাজি-দখল চালাচ্ছে।

‘আমার মনে হচ্ছিল, এখন কি রক্ষীবাহিনীর মতো সমন্বয়কবাহিনী তৈরি হচ্ছে নাকি! সে সময় আমার মনে হয়েছিল, এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটার আর দরকার কী, এখন তো সবাইকে অ্যাকোমোডেট করা নিয়ে ভাবা উচিত।’

উমামা বলেন, ‘আমার চিন্তা ছিল এই প্ল্যাটফর্মটা আরও ব্রড ও ডিসেন্ট্রালাইজ করে ফেলা উচিত। আমি মনে করি না, এটা ভুল চিন্তা ছিল। ওই সময় এই প্ল্যাটফর্মটা থেকে যাওয়ার অনেক ডিমেরিটস আমরা এখনো ভোগ করছি। কিন্তু ওই সময় এ কথাটা বলে অনেক মানুষকে আমি শত্রু বানিয়ে ফেলেছি।’

জুলাই আন্দোলনের সময়, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব ছিলেন উমামা ফাতেমা। গণ-অভ্যুত্থানের পর ছাত্র ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর নানা তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে উমামা ফাতেমা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোডে (উপদেষ্টাদের বাসভবন) বসে ঠিক করা হতো; বাস্তবায়ন হতো সেগুলোই।

‘আমি পুরো প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি বলে মনে হতো, সবকিছু হিজিবিজি লাগত, মাসের পর মাস স্ট্রেসফুল অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি।’ উমামা বলেন, ‘বিষয়গুলো এত অদ্ভুত ছিল যে, কোনো কিছুর কোনো ঠিক-ঠিকানা ছিল না। চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আসত, এক একজনের বিরুদ্ধে যে স্বজনপ্রীতি ও শেল্টার-টেল্টার দেওয়ার অভিযোগ আসত, এগুলো আমি খুব ভালো করেই জানতাম।

“শুধু চট্টগ্রামের কাহিনি ‘সলভ’ করতে গেলে প্যান্ট খুলে যেত অনেকের। এ রকম আরও অনেক জেলার কাহিনি আছে। এগুলো ধরতে গিয়ে দেখেছি, এগুলো তো অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে।”

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

ধানমন্ডির ছায়ানটে হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ৩০০

রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ছায়ানট ভবনে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ছায়ানটের প্রধান ব্যবস্থাপক...

জোহানেসবার্গে বন্দুক হামলায় নিহত ৯

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের পশ্চিমাঞ্চল বেকার্সডাল টাউনশিপে রোববার (২১ ডিসেম্বর) ভোরে বন্দুকধারীর এক নৃশংস হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১০ জন...

Related Articles

নিরাপত্তা শঙ্কায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে গানম্যান চাইলেন হিরো আলম

জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে...

১৪ ঘণ্টায় ২৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা সহযোগিতা পেয়েছেন তাসনিম জারা

ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম...

নয়াদিল্লির পর কলকাতায়ও বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির পর এবার কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনেও বিক্ষোভ ও...

তারেক রহমানের সংবর্ধনায় যোগ দেবে ৫০ লাখ মানুষ: রিজভী

ঢাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫০ লাখ মানুষ যোগ...