গণ-অভ্যুত্থানের পথিকৃৎ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ ক্রমেই প্রকট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে ‘আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি’। তাদের ভাষ্য, অংশীদার রাজনৈতিক শক্তিগুলো একে অপরকে হেয় করে কথা বলায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে, ক্ষুণ্ন হচ্ছে শহীদদের আত্মদান। শুক্রবার রাজধানীর বিজয় নগরের বিজয়-৭১ চত্বর থেকে শুরু হওয়া এক প্রতীকী কফিন রোডমার্চে এসব কথা বলেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
শহীদদের স্মরণে আয়োজিত রোডমার্চটি যাত্রাবাড়ী হয়ে বাড্ডা, উত্তরা এবং মিরপুর ১০ নম্বর ঘুরে শেষ হয়। বিজয়-৭১ চত্বর থেকে শুরু হওয়া মিছিলে অংশ নেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। পথসভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, চলমান রাজনৈতিক জোটগুলোর মধ্যে আস্থার অভাব, দোষারোপের প্রবণতা এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য আন্দোলনের ভবিষ্যৎকে সংকটে ফেলছে।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “গত জানুয়ারিতে বিএনপি ও ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল, কেউ কাউকে হেয় করে কথা বলবে না। কিন্তু এখন তারা একে অপরকে ‘চরের দল’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘রাজাকার’ বলছে। কেউ বলছে ‘চাঁদা তোলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে’। এইসব কথাবার্তা শহীদের রক্তের অপমান।” তিনি দাবি করেন, এই আচরণ জনমনে নেতিবাচক বার্তা ছড়াচ্ছে এবং আন্দোলনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “গোপালগঞ্জে আবারও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখা যাচ্ছে। এদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা যে কোনো মূল্যে ব্যর্থ করতে হবে। একটি নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে জনগণের ঐক্য সবচেয়ে জরুরি।”
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন শ্রমবিষয়ক সম্পাদক শাহ আবদুর রহমান, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, যুব পার্টির দপ্তর সম্পাদক আমানুল্লাহ সরকার এবং ছাত্রপক্ষের সাধারণ সম্পাদক রাফিউর রহমান। বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি ও দলে দলে ভাগ হয়ে যাওয়া আন্দোলনকে দুর্বল করছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা অসম্ভব করে তুলছে।
এবি পার্টি বারবার শহীদের আত্মদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে রাজনৈতিক ভেদাভেদ পরিহারের আহ্বান জানালেও বাস্তবতা বলছে, রাজনৈতিক মাঠে এখনো বিদ্বেষমূলক বাক্যবাণই এগিয়ে। আন্দোলনের মঞ্চে একে অপরকে হেয় করা আর দোষারোপের প্রবণতা—এই দুইয়ের সংঘাতে বিভাজন ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
Leave a comment