ফেসবুকের প্রাক্তন সিওও শেরিল স্যান্ডবার্গ এবং তাঁর সহকারী ইউরোপ সফরের সময় ১১.৩ লক্ষ টাকার অন্তর্বাস কিনেছিলেন—এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন ফেসবুকের এক প্রাক্তন কর্মী, উইন-উইলিয়ামস। তাঁর লেখা নতুন বইয়ে এই তথ্য উঠে এসেছে, যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
২০১৭ সালে ফেসবুকের চাকরি ছাড়েন উইন-উইলিয়ামস, যেখানে তিনি ছয় বছর কাজ করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লেখা ‘কেয়ারলেস পিপল: আ ক্যাউশনারি টেল অফ পাওয়ার, গ্রিড এন্ড লস্ট আইডিয়ালিজম’ বইয়ে তিনি ফেসবুক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছেন।
বইয়ে দাবি করা হয়েছে, শেরিল স্যান্ডবার্গ এবং তাঁর মহিলা সহকারী ইউরোপ ভ্রমণের সময় গাড়িতে একে অপরের কোলে ঘুমাতেন এবং চুলে হাত বুলিয়ে দিতেন। এছাড়াও, স্যান্ডবার্গ নাকি উইন-উইলিয়ামসকে তাঁদের দুজনের জন্য অন্তর্বাস কিনতে বলেছিলেন, যার জন্য বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ হয়।
আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ব্যক্তিগত জেট বিমানে বাড়ি ফেরার পথে স্যান্ডবার্গ উইন-উইলিয়ামসকে শয্যাসঙ্গী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে স্যান্ডবার্গ ক্ষুব্ধ হন।
মেটার একজন মুখপাত্র উইন-উইলিয়ামসের এই দাবিগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এগুলি শুধুমাত্র সংস্থার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যা অভিযোগ। বরং উইন-উইলিয়ামসকে খারাপ পারফরম্যান্স এবং আচরণজনিত কারণে আট বছর আগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল, যা অভ্যন্তরীণ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।”
মেটা আরও দাবি করেছে, ফেসবুক-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোই উইন-উইলিয়ামসকে আর্থিকভাবে মদত দিচ্ছে এবং এটি সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।
শুধু স্যান্ডবার্গ নন, বইয়ে ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধেও গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। উইন-উইলিয়ামস দাবি করেছেন, একসময় ইঞ্জিনিয়ারিং ও কোডিং নিয়ে আচ্ছন্ন থাকা জাকারবার্গ ধীরে ধীরে রাজনীতি ও জনপ্রিয়তার দিকে ঝুঁকে পড়েন।
বইতে বলা হয়েছে, জাকারবার্গের এশিয়া সফরের সময় ইন্দোনেশিয়ায় ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম নিশ্চিত করার দায়িত্বও উইন-উইলিয়ামসকে দেওয়া হয়েছিল। বইটি প্রকাশের আগে পর্যন্ত প্রকাশক বিষয়টি গোপন রেখেছিল, কারণ এতে ফেসবুক নেতৃত্বের কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে।
উইন-উইলিয়ামস তাঁর বইয়ে স্যান্ডবার্গ ও জাকারবার্গকে “বেপরোয়া ও ক্ষমতালোভী” বলে বর্ণনা করেছেন এবং তাদের কার্যকলাপকে “বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী” বলে অভিহিত করেছেন।
Leave a comment