ইউরোপের চারটি প্রধান দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাজ্য—ফিলিস্তিনের গাজা পুনর্গঠনে আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছে। এই পরিকল্পনাটি মিসরের প্রস্তাবে ভিত্তি করে এবং পাঁচ বছরের মধ্যে গাজার পুনর্গঠন বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে। পরিকল্পনাটির মোট খরচ ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত না করে এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণ করেই পুনর্গঠন করার কথা বলা হয়েছে এই পরিকল্পনায়।
গাজা পুনর্গঠনের এই পরিকল্পনা আরব নেতারা অনুমোদন করেছেন। কায়রোতে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত আরব লিগের সম্মেলনে এটি অনুমোদিত হয়, এবং তিনদিন পরে জেদ্দায় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি গ্রহণ করা হয়। এর পরপরই ইউরোপের চারটি দেশ, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে বলেন, তারা এই আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাকে ‘বাস্তবসম্মত’ বলে অভিহিত করছেন। তাদের মতে, এই পরিকল্পনায় গাজার বিপর্যয়কর জীবনযাত্রার দ্রুত এবং টেকসই উন্নতির প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
তবে এই পরিকল্পনাটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়া হবে এবং তাদের জর্ডান ও মিসরে স্থানান্তরিত করা হবে। ট্রাম্পের দৃষ্টিতে, গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বা ভূমধ্যসাগরের উপকূলে একটি রিসোর্ট এলাকা হিসেবে রূপান্তরিত করা হবে। কিন্তু ট্রাম্পের এই প্রস্তাব ফিলিস্তিনিরা এবং আরব নেতারা একযোগভাবে নাকচ করেছেন।
এদিকে, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আরব-সমর্থিত এই পরিকল্পনাটি ট্রাম্পের পরিকল্পনার একটি বিকল্প হিসেবে সামনে এসেছে। যদিও ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে, ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, এটি গাজার জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতি এবং গাজার অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য একটি কার্যকর উপায় হতে পারে। গাজার পুনর্গঠনে বিকল্প প্রস্তাব গ্রহণের জন্য কাজ করছে ওআইসি, যাতে আরও দেশ এতে যোগ দিতে পারে এবং সমাধান পাওয়া যায়।
এই পরিস্থিতিতে গাজার ভবিষ্যৎ এবং তার পুনর্গঠন নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা হয়েছে, যার মধ্যে আরব-সমর্থিত পরিকল্পনাটির গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশ বাড়ছে, যদিও এর বাস্তবায়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মতবিরোধ এখনও বিদ্যমান।
Leave a comment