বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন দিনের সরকারি সফরে আজ সোমবার (১১ আগস্ট) মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করছেন। এই সফরে অভিবাসন, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং বহুমুখী সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্য নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে অন্তত পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। “আমরা চাই, মালয়েশিয়া আমাদের কাছ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক দক্ষ ও আধা-দক্ষ কর্মী নিক। এই সফরে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
প্রধান উপদেষ্টা মঙ্গলবার পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ হালাল অর্থনীতি, সেমিকন্ডাক্টর শিল্প, কৃষি, শিক্ষা এবং মানুষে-মানুষে যোগাযোগ জোরদারের নানা উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, “মালয়েশিয়া কেবল শ্রমবাজার নয়, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সম্ভাব্য বড় অংশীদার। আমরা এই সফরের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের ভিত্তি আরও মজবুত করতে চাই।”
সফরের শেষ দিনে বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া—ইউকেএম) থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি গ্রহণ করবেন। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একটি স্মারক বক্তৃতা দেবেন। যেখানে শিক্ষা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও টেকসই অর্থনীতি নিয়ে মতামত তুলে ধরবেন বলে জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরে রয়েছেন- পররাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত এবং কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সফর। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকা সফর করেছিলেন, যা দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া সফর বাংলাদেশের শ্রমবাজার ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রের জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনতে পারে।
Leave a comment