জাতিসংঘের আবাসিক এবং মানবিক সমন্বয়কারী মার্কোলুইগি করসি জানিয়েছেন, মিয়ানমারের ভূমিকম্পে প্রায় দুই কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ।
তিনি বলেন, এটি বেশ বড় একটি এলাকা যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই এলাকায় প্রায় ২ কোটি মানুষের বসবাস। এই মুহূর্তে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। মান্দালয়ে দেড় হাজারের মতো ঘরবাড়ি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর হতাহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সেবা প্রদান।
৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। তবে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে দেশটির সরকারকে।
চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব ব্যাহত করছে ত্রাণ তৎপরতা। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা যখন জীবিতদের সন্ধান করছেন তখন জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র অভাব ত্রাণ প্রচেষ্টা ব্যাহত করছে।
ভূমিকম্পে রাস্তাঘাট এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশটির দুই বড় শহর, মান্দালয় ও ইয়াংগুনের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
আবারও একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হতে পারে এই আশঙ্কায় অনেক মানুষ রাতে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট জোর দিয়ে বলছে, যেকোনো সহায়তা যেন স্বাধীনভাবে ও স্থানীয় নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিতরণ করা হয় বলে, বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে ।
এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মান্দালয়ের ঐতিহাসিক অনেক ভবন মাটিতে মিশে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতেই ধ্বংসস্তুূপ ঘেঁটে দেখছেন। উদ্ধারকাজে যুক্ত একজন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে অসহায় বোধ করছেন তারা। ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া মানুষের আর্তচিৎকার ভেসে আসছে।
মান্দালয়ের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, একটা হোটেল ভেঙে পড়েছে যার নিচে আটকে রয়েছেন অনেকে। পেশায় শিক্ষিকা ওই নারী বলছিলেন, আমি মায়েদের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। তাদের সন্তানেরা ভেঙে পড়া ওই হোটেলের স্তূপের নিচে আটকে রয়েছে। এই দৃশ্য দেখা যায় না। এই ভূমিকম্প বিপর্যয় ডেকে এনেছে। আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন।
Leave a comment