স্ট্রোক এমন একটি গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি, যা একবার হলে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে বা রক্ত জমাট বাঁধলে স্ট্রোক হয়। এর ফলে কথা বলা, হাঁটা–চলার মতো মৌলিক ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কা থাকে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হয়।
ব্রিটেনের এনএইচএস জানায়, স্ট্রোক হলে যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়, সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও তত বাড়ে। তবে ঝুঁকি কমাতে হলে আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য এ ঝুঁকি আরও বেশি। তাই সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, বাড়িতে তৈরি সুষম খাবার খাওয়া এবং কিছু বিশেষ খাবার নিয়মিত ডায়েটে রাখলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। নিচে তেমন পাঁচটি খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো—
১. শাকপাতা
পালং, কুমড়া, লাউ বা পুঁই—সব ধরনের শাকেই থাকে প্রচুর ভিটামিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, হৃদযন্ত্রের ব্লকেজ প্রতিরোধ করে এবং মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।
২. আখরোট
আখরোটে আছে আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড, যা এক ধরনের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি শরীরের প্রদাহ কমায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী।
৩. সাইট্রাস ফল
লেবুজাতীয় ফল, কিউই বা অন্যান্য ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ ফল শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। এর মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভনয়েড ও পটাশিয়াম হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষা দেয় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়, যা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ প্রতিরোধে কার্যকর।
৪. মাছ
মাছে প্রচুর প্রোটিন ছাড়াও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত মাছ খেলে স্ট্রোকসহ বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি অনেক কমে।
৫. টকদই
টকদইতে থাকা পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি ও প্রোটিন রক্তনালীগুলো সচল রাখে এবং সোডিয়াম-পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। এতে হজমও ভালো হয় এবং হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ-
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে শুধু খাবার নয় পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করাও সমান জরুরি।
সূত্র: এইসময়
Leave a comment