আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে তিনি নিজেই সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “সিলেট-৪ আসনে আমাকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি আজ রাতেই নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশ আমি কখনও অমান্য করিনি, ভবিষ্যতেও করব না। তিনি আমাদের জাতীয় নেতা, তার নির্দেশই আমার আদেশ। সিলেট-৪ আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দায়িত্ব আমি মাথা পেতে গ্রহণ করেছি। সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছায় হবে।”
এর আগে আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট-১ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে গত সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি সেই আসনে চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরকে প্রার্থী ঘোষণা করে। এরপর তাকে দলীয় হাইকম্যান্ডে তলব করা হয় এবং শেষ পর্যন্ত সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়।
১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেটের কুমারপাড়ার বিশিষ্ট চৌধুরী পরিবারে জন্ম নেন আরিফুল হক চৌধুরী। তার পিতা মুহাম্মদ শফিকুল হক চৌধুরী ও মাতা আমিনা বেগম। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই তিনি শিক্ষা জীবন শুরু করেন এবং পারিবারিক রাজনৈতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠেন।
স্থানীয় রাজনীতিতে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তিনি সিলেট নগর রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কমিটির প্রধান হিসেবেও কাজ করেন।২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় তাকে যৌথবাহিনী আটক করে। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে, যার রায়ে
২০০৮ সালে আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে ২০১৩ সালে তিনি সব অভিযোগ থেকে খালাস পান। ২০১৩ সালে আরিফুল হক প্রথমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র পদে আসীন হন তিনি। মেয়র হিসেবে তিনি সাইফুর রহমান শিশু পার্ক সংস্কারসহ একাধিক নগর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন।
২০১৪ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত হওয়ায় তিনি গ্রেফতার হন এবং ২০১৫ সালে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে আদালতের রায়ের মাধ্যমে তিনি পুনরায় দায়িত্ব ফিরে পান।২০১৮ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে সিলেটের মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। সেই নির্বাচনে তিনি কামরানকে ৬,১৯৬ ভোটে পরাজিত করেন। সর্বশেষ, বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে আরিফুল হক চৌধুরী আবারও রাজনৈতিকভাবে আলোচনায় ফিরলেন।
Leave a comment