সম্পর্ক শুরু করা শুধুমাত্র ভালো লাগার অনুভূতির ভিত্তিতে নেওয়া একটি সিদ্ধান্ত নয়। এটি একটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ, যেখানে দুইজনের আদর্শ, মূল্যবোধ এবং ব্যক্তিগত লক্ষ্য একে অপরের সঙ্গে মেলানো বা বোঝাপড়া করা অত্যন্ত জরুরি। তাই সম্পর্কের আগে কিছু বিষয় স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা আবশ্যক, যাতে ভবিষ্যতে আফসোস বা দ্বন্দ্ব এড়ানো যায়।
প্রথমত, আদর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সম্পর্কের শুরুতেই জানা প্রয়োজন, দুজনের মূল্যবোধ এবং জীবনের লক্ষ্য কতটা মিলে যায়। ব্যক্তিগত স্বপ্ন, ক্যারিয়ার পরিকল্পনা এবং জীবনধারার বিষয়ে দুজনের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা যাচাই করা জরুরি।
দ্বিতীয়ত, একজনের সাফল্যের প্রতি অপরজনের প্রতিক্রিয়া। সম্পর্কের সময়ে দেখা যায়, কেউ নিজের সাফল্য প্রকাশ করলে অপরজনের আচরণ পরিবর্তিত হতে পারে। সম্পর্কের শুরুতেই লক্ষ্য করা প্রয়োজন, প্রিয়জন আপনার অর্জন বা সাফল্যের বিষয়ে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন—সহানুভূতিশীল, ঈর্ষান্বিত, না অবহেলাপূর্ণ।
তৃতীয়ত, ব্যক্তিগত ‘খুঁত’ ও সত্যিকার স্বভাব। মানুষ নিখুঁত নয়, এবং সম্পর্কের মধ্যে সময়ে সময়ে ব্যক্তিগত খুঁত প্রকাশ পায়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই খুঁতগুলো প্রকাশের সময় অপরজন কেমন প্রতিক্রিয়া দেন। সম্পর্কের শুরুতেই এসব ছোটখাটো অসঙ্গতি পর্যবেক্ষণ করা ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয়।
চতুর্থত, মতের অমিলের সময় প্রতিক্রিয়া। প্রত্যেক সম্পর্কেই মতের অমিল বা ঝগড়া দেখা দেয়। কেউ কি সহজে রাগান্বিত হয়ে ওঠেন, নাকি সংযমীভাবে সমস্যার সমাধান করেন—এই বিষয়গুলো সম্পর্কের মূল ভিত্তি বোঝাতে সাহায্য করে।
পঞ্চমত, অন্যদের সঙ্গে আচরণ। সম্পর্কের সময় শুধু আপনার সঙ্গে নয়, প্রিয়জন অন্যদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছেন তা লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ। রিকশাচালক, নিরাপত্তা প্রহরী বা সাধারণ কর্মীর সঙ্গে তাঁদের আচরণ সম্পর্কের চরিত্র বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
এই পাঁচটি দিক খেয়াল করলে সম্পর্কের শুরুতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব এবং সম্পর্ককে সুস্থ, টেকসই ও বিশ্বাসযোগ্য করা যায়। তাই শুধুমাত্র আকর্ষণ বা আবেগের ওপর ভরসা না রেখে এসব বিষয় বিবেচনা করা অপরিহার্য।
Leave a comment