বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে ছেমন আরা বেগম (৩৫) নামে এক নারী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বসতঘরের আড়ার সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে পরিবার ও পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
পরিবারের বরাতে জানা যায়, ঘটনার সময় ছেমন আরার স্বামী মো. ইউনুছ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বাইরে থেকে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। প্রথমে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হয় তাঁর। পরে তিনি জোর করে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করলে স্ত্রীকে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। হতবিহ্বল হয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেশীদের ডাকেন এবং লামা থানা পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে লামা থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে গজালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই কাজল হালদার ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। সুরতহালে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন বা সন্দেহজনক বিষয় না পাওয়ায় এটি আত্মহত্যা বলেই প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পুলিশ জানায়, ছেমন আরার স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পাওয়ার আবেদন করেন। যেহেতু ঘটনাস্থল ও সুরতহাল প্রতিবেদনে সন্দেহজনক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ছেমন আরা বেগম ও তার স্বামী উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে। ছয় মাস আগে ছেমন আরার এক মেয়ে পানিতে ডুবে মারা যায়। সন্তানের মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। পরিবারের দাবি, ওই ঘটনার পর থেকেই তিনি গভীর বিষণ্নতায় ভুগছিলেন, যা হয়তো তাঁর আত্মহত্যার সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখতে পারে।
এদিকে, স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন স্বামী মো. ইউনুছ। ঘটনার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে আত্মীয়স্বজন তাঁকে উদ্ধার করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন বলে পরিবার জানিয়েছে। এ ঘটনায় লামা থানা পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা (ইউডি) দায়ের করেছে।
Leave a comment