যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ সংগঠনকে সমর্থন জানিয়ে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৯ আগস্ট) স্থানীয় সময় রাত ৯টার মধ্যে মেট্রোপলিটন পুলিশ অন্তত ৪৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থনের অভিযোগে এই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তারা ঘোষণা দিয়েছিল—যত সময়ই লাগুক না কেন, এই সংগঠনের সমর্থনকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা শান্তভাবে বসে আছেন, হাতে প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা— “আমি গণহত্যার বিরোধী, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি”। সেখান থেকে পুলিশ একজন একজন করে তাদের সরিয়ে নিয়ে যায়।
বিক্ষোভটির আয়োজন করে ‘ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস’ নামের একটি সংগঠন। তারা জানায়, এই প্রতিবাদ গাজায় চলমান গণহত্যা এবং প্যালেস্টাইন অ্যাকশন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিক্রিয়া।
২০০০ সালের সন্ত্রাসবাদ আইন অনুযায়ী, ব্রিটিশ সরকার গত মাসে প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে, সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। ওই আইন অনুসারে সংগঠনটির সদস্যপদ গ্রহণ, সমর্থন বা তাদের পক্ষে বক্তব্য দেওয়া এখন অপরাধ। দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আল জাজিরা জানায়, “আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি” লেখা টি-শার্ট বা পোস্টার বহন করলেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। প্রতিবেদক সোনিয়া গালেগো বলেন, গ্রেপ্তার ও শাস্তির হুমকি আন্দোলনকারীদের থামাতে পারেনি।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্যাডি ফ্রেন্ড বলেন, “যদি আমরা নীরবে বসে মাত্র সাতটি শব্দ লেখা একটি সাইনও ধরতে না পারি, তাহলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলতে আর কী বোঝায়?”
অন্য অংশগ্রহণকারী দাদি মানজি ম্যান্সফিল্ড জানান, আগের এক বিক্ষোভে গ্রেপ্তার হওয়ার পরও তিনি আবার এসেছেন। তার ভাষায়, “এটা সেই ব্রিটেন নয়, যেখানে আমি বড় হয়েছি। এখন আমরা ভিন্ন এক বাস্তবতায় বাস করছি, যা আমি মেনে নেব না।”
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্য এক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণভাবে প্ল্যাকার্ড বহনকারীদের গ্রেপ্তারকে মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য ও ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এমপি জন ম্যাকডোনেল পার্লামেন্ট স্কয়ার থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, “এটি গণতান্ত্রিক অধিকারের পরিপন্থি পদক্ষেপ।”
Leave a comment