জাপান অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি, প্রথম ইউরেনিয়াম-নির্ভর রিচার্জেবল ব্যাটারি উদ্ভাবন করেছে । এ ক্ষেত্রে ইউরেনিয়ামকে ব্যবহার করা হয়েছে ‘অ্যাকটিভ ম্যাটেরিয়াল’ হিসেবে। এই ইউরেনিয়াম কাজে লাগবে ব্যাটারির ভেতরের তড়িৎরাসায়নিক প্রক্রিয়ায়। এ প্রক্রিয়ায় সাধারণত লিথিয়াম বা সিসা ব্যবহার করে ব্যাটারির ভেতরে ইলেকট্রনের প্রবাহ ঘটানো হয়। এভাবে ব্যাটারির ভেতরে তৈরি হয় বিদ্যুৎ। এই লিথিয়াম বা সিসার বদলেই নতুন ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ইউরেনিয়াম।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাপান অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি জানিয়েছে, ‘ইউরেনিয়ামকে অ্যাকটিভ ম্যাটেরিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আমরা সফলভাবে একটি রিচার্জেবল ব্যাটারি বানিয়েছি ।’
গবেষকদের ধারণা, এই উদ্ভাবন একসঙ্গে বড় দুটি বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান করবে। এক, নিউক্লিয়ার বর্জ্যব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসতে পারে এর ফলে। আর দুই, কার্যকর শক্তি সংরক্ষণাগার হিসেবে নতুন সম্ভাবনার দরজার খুলে যাবে।
গবেষক দলের ভাষ্যে জানা গেছে, এই গবেষণায় ব্যবহৃত ইউরেনিয়ামের বৈশিষ্ট্য ডিপলেটেড ইউরেনিয়ামের মতো। নিউক্লিয়ার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম এনরিচমেন্টের পরে বাড়তি বা অতিরিক্ত যে ইউরেনিয়াম থেকে যায়, সহজ ভাষায় সেগুলোকেই বলে ডিপলেটেড ইউরেনিয়াম। এগুলোকে বর্তমানে নিউক্লিয়ার বর্জ্য হিসেবে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করতে হয়। এই সমস্যার সমাধান মিলবে এ গবেষণার হাত ধরে।
গবেষক দলের ভাষ্যমতে, ‘ইউরেনিয়ামের বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সে জন্য বহুকাল ধরেই এটিকে রাসায়নিক ব্যাটারির সম্ভাব্য অ্যাকটিভ ম্যাটেরিয়াল বলে ভাবা হচ্ছিল।’ এ গবেষণায় অবশেষে তা বাস্তবায়িত হলো। জাপানি অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি বলছে, ‘ এর মাধ্যমে ডিপলেটেড ইউরেনিয়াম কাজে লাগানো যাবে। নিউক্লিয়ার বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও সহজ হবে এর ফলে।’
ডিপলেটেড ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে প্রথম এরকম ব্যাটারি জাপানই উদ্ভাবন করেছে। তবে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইয়ো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সিজিয়াম-১৩৭ ও কোবাল্ট-৬০ ব্যবহার করে ব্যাটারি উদ্ভাবন করেছেন। সেই গবেষণাটিকেও বেশ সম্ভাবনাময় বলে মনে করা হচ্ছে। আসলে, নিউক্লিয়ার ব্যাটারি নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা হচ্ছে গোটা বিশ্বেই। এর কোনটি প্রথম বাজারে আসার উপযুক্ত বলে বিবেচিত হবে, তা জানতে অপেক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই।
Leave a comment