রাজশাহীর মোল্লাপাড়ার পাহাড়িয়া মহল্লা থেকে পরিবারগুলোকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। এতে ভুক্তভোগী পরিবার, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নেতা, মানবাধিকারকর্মী, উন্নয়নকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, পাহাড়িয়া সম্প্রদায় এখানে টানা ৫৩ বছর ধরে বসবাস করছে। দাদাদের আমল থেকে তিন প্রজন্ম পার হয়ে গেছে। এখন তাঁদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। উচ্ছেদ ঠেকাতে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে ঘোষণা দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে ময়ূরী বিশ্বাস নামের এক বাসিন্দা বলেন, তাঁদের পূর্বপুরুষ এই জমিতে বসবাস করলেও এখন সাজ্জাদ আলী নামের এক ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন। ভয় দেখিয়ে সামান্য টাকা দিয়ে জায়গা ছাড়তে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রশাসন তৎপর হওয়ায় উচ্ছেদ প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সহসভাপতি রাজ কুমার শাও জানান, সিটি করপোরেশন তাঁদের জন্য শৌচাগার ও টিউবওয়েল স্থাপন করেছে, যা প্রমাণ করে জায়গাটি ব্যক্তিগত মালিকানার নয়। সরকারকে তাঁদের স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, উদীচীর সহসভাপতি অজিত কুমার মণ্ডল, উন্নয়নকর্মী ফয়জুল্লাহ চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, সংবাদ প্রকাশ না হলে এ অন্যায়ের কথা ছড়িয়ে পড়ত না। সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার কারণেই উচ্ছেদ প্রচেষ্টা রুখে দাঁড়ানো সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধের পর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়ায় ১৬ কাঠা জমিতে ছয়টি পাহাড়িয়া পরিবারকে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে ১৬টি পরিবার বসবাস করছে। সম্প্রতি সাজ্জাদ আলী মালিকানা দাবি করে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে উচ্ছেদের চেষ্টা করলে তিনটি পরিবার ঘর ছাড়লেও বাকি পরিবারগুলো আন্দোলনে নেমে আসে। পরবর্তীতে পুলিশ ও প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
Leave a comment