মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে একটি শপিং সেন্টারে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশিসহ ১২৪ জন অবৈধ প্রবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। সোমবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত কুয়ালালামপুরের জনপ্রিয় ব্যবসাকেন্দ্র জিএম প্লাজায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ইমিগ্রেশন বিভাগের পাশাপাশি অভিযানে সহযোগিতা করে মালয়েশিয়া কোম্পানি কমিশন (এসএসএম), কুয়ালালামপুর ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয় (কেপিডিএনকেএল) এবং কুয়ালালামপুর সিটি হল (ডিবিকেএল)। অভিযানের লক্ষ্য ছিল—অনিবন্ধিত শ্রমিক, ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যক্তি এবং বৈধ কাগজপত্রবিহীন বিদেশিদের শনাক্ত করা।
কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশন পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সাওপি ওয়ান ইউসুফ জানান, অভিযানে মোট ২০৫ জনকে তল্লাশি করা হয়। তাদের মধ্যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের ১২৪ জনকে অবৈধ প্রবাসী হিসেবে আটক করা হয়েছে। তবে কতজন বাংলাদেশি আটক হয়েছেন, তা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
পরিচালক জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—বৈধ কাগজপত্র না থাকা,ভ্রমণ নথি না থাকা, ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণ
যা ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩–এর ৬(১)(সি) ও ১৫(১)(সি) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযানের সময় বেশ কয়েকজন আটক প্রবাসী নিজেদের অসহায়তা ও মানবিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। পাকিস্তানি নাগরিক মুনির (৪৭) বলেন,“আমি ছয় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় আছি। পরিবারের আট সদস্য অসুস্থ। আমাকে ছেড়ে দিন। আমি কানাডা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।”
মিয়ানমারের নাগরিক কামিদ (২২) জানান, তিন মাস আগে এক এজেন্টকে ৬ হাজার রিঙ্গিত দিয়ে তিনি মালয়েশিয়ায় এসেছেন। কিন্তু এখনো কোনো কাজ পাননি এবং কোনো বৈধ কাগজপত্রও নেই।
অভিযানের সময় ডিবিকেএল ছয়টি কম্পাউন্ড জারি করে এবং লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা ও বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের দায়ে একটি দোকান বন্ধের নোটিশ দেয়। আটক ১২৪ জনকে কুয়ালালামপুরের জালান দুতা এলাকায় অবস্থিত ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
মালয়েশিয়ায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের তীব্রতা বেড়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে, বিদেশিদের অবশ্যই বৈধ কাগজপত্র ও ভিসা নিশ্চিত করতে হবে; অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a comment