মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় অভিযোগ উঠেছে— পরকীয়া নিয়ে ঝগড়ার জেরে স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়েছেন তৌহিদ বেপারী (৪০) নামের এক ব্যক্তি। নিহত গৃহবধূ মাহফুজা বেগম (৩৫) তিন সন্তানের জননী। উপজেলার মজুমদারকান্দি খালপাড় গ্রামের বেপারি বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে নিজ বাড়ির পাশে একটি আমগাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মাহফুজার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে মরদেহটি মাহফুজার বাবার বাড়ি রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের দুর্গাবর্দি গ্রামে দাফন করা হয়। নিহতের পরিবার দাবি করেছে, এটি আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা। মাহফুজার ভাই সোবাহান বেপারী বলেন, “তৌহিদের সঙ্গে এক নারীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ নিয়েই প্রায়ই ঝগড়া হতো। আমার বোনকে সে নিয়মিত মারধর করত। রোববার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে খবর পাই, সকালে বোনের মরদেহ গাছে ঝুলছে। আমরা নিশ্চিত, সে-ই হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তৌহিদ নাটক সাজিয়ে পালিয়ে গেছে। “আমরা মামলা করব এবং আইনের কাছে ন্যায়বিচার চাই,” বলেন তিনি। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত স্বামী তৌহিদ বেপারী গা-ঢাকা দিয়েছেন। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।”
তিনি আরও বলেন, “ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত তৌহিদ বর্তমানে পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক সহিংসতা ও পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে দ্বন্দ্ব এখন বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সচেতনতা ও কাউন্সেলিংয়ের অভাব, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং সামাজিক কলঙ্কের ভয় অনেককে চরম পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করে।
Leave a comment