Home আন্তর্জাতিক ভারতে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য হিন্দু-মুসলিম ঐক্য অপরিহার্য: মাওলানা আরশাদ মাদানি
আন্তর্জাতিক

ভারতে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য হিন্দু-মুসলিম ঐক্য অপরিহার্য: মাওলানা আরশাদ মাদানি

Share
Share

ভারতের বরেণ্য আলেম ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানি বলেছেন, ভারতের প্রকৃত শান্তি ও উন্নয়নের জন্য হিন্দু-মুসলিম ঐক্য অপরিহার্য। সাম্প্রদায়িকতা দেশকে শুধু পিছিয়ে দেয় এবং বিভক্ত করে।

রোববার (৩১ আগস্ট) দিল্লিতে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের দিল্লি শাখার বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাওলানা মাদানি এ সময় ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আসামের মুসলমানদের ওপর নানা রকম নিপীড়ন চলছে। কখনো নাগরিকত্ব বাতিলের হুমকি, আবার কখনো ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া—এসব মানবিক ও সাংবিধানিকভাবে অন্যায্য।”

তিনি আরও জানান, এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই কিছু ক্ষেত্রে সফলতাও অর্জিত হয়েছে। “ভারতের মুসলমানরা বাইরের কেউ নয়, তারা এই দেশেরই সন্তান। তাদের পূর্বপুরুষরাই এখানকার মানুষ এবং এখানেই ইসলাম গ্রহণ করেছেন,” বলেন মাদানি।

দারুল উলুম দেওবন্দের বর্ষীয়ান আলেম মাওলানা আরশাদ মাদানি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের অবদানও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা ও অগ্রগতিতে মুসলমানদের রক্ত ও ঘাম মিশে আছে। তাই আজ যদি তাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়, তা শুধু অন্যায়ই নয়, দেশকেও দুর্বল করে দেবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মোহাম্মদ মুসলিম কাসেমী এবং পরিচালনা করেন মুফতি আবদুর রাজ্জাক মাজাহেরী। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিল্লির বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক আলেম, ইমাম, মাদরাসা প্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষ এতে অংশ নেন। সভার শেষ হয় মাওলানা মাদানির বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ভারতীয় মুসলমানদের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম সংগঠন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় সংগঠনটির জন্ম হয় এবং উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এ সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে সংগঠনটি ভারতের ধর্মীয় সম্প্রীতি, শিক্ষা, মানবাধিকার এবং মুসলমানদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, মাওলানা মাদানির বক্তব্য কেবল ধর্মীয় আহ্বান নয়, বরং ভারতের বহুত্ববাদী সমাজের ঐতিহাসিক বাস্তবতাকেও প্রতিফলিত করে। দেশের সামাজিক অগ্রগতি ও শান্তি নিশ্চিত করতে সাম্প্রদায়িক বিভাজন কমিয়ে ধর্মীয় সম্প্রীতি জোরদারের ওপর তার জোর দেওয়া সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি, দু’দিনে নিহত ৭

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে চার মাস পর আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে অন্তত...

ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা

আজ মঙ্গলবার ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং। ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বাংলা। ১৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি। বছর শেষ হতে আরো ২২ দিন বাকি রয়েছে।...

Related Articles

দশ লাখ ডলারের ‘গোল্ড কার্ড’ অভিবাসন ভিসা চালু  করলো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত নাগরিকত্ব পেতে আগ্রহী ধনী বিদেশিদের জন্য নতুন ভিসা কর্মসূচি চালু...

কঠোর নিরাপত্তায় আল-আকসায় ইসরায়েলিদের অনুপ্রবেশ, উত্তেজনা চরমে

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই প্রায় দুই শতাধিক...

মিয়ানমারের হাসপাতালে বিমান হামলা: নিহত কমপক্ষে ৩১

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি হাসপাতালে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় কমপক্ষে...

মালয়েশিয়ায় দুই অভিযানে ৪৭ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুটি পৃথক অভিযানে বাংলাদেশিসহ ৫৬...