মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়ির মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন সুমাইয়া আক্তার (২২) নামে এক ইতালি প্রবাসীর স্ত্রী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ তার বাবার বাড়ি রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে দাফন করা হয়। সুমাইয়া ওই গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নাসির হাওলাদারের মেয়ে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) গভীর রাতে সুমাইয়ার বাবার বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ মাস আগে ইতালি প্রবাসী জহিরুল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় সুমাইয়ার। বিয়ের পর জহিরুল স্ত্রীকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরিবারের আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি। এই বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। অভিযোগ রয়েছে, এ বিয়ের সময় দেওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকারও আত্মসাৎ করেন জহিরুলের পরিবারের সদস্যরা।
সুমাইয়ার পরিবার জানায়, স্বামীর পরিবার—শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ—নিয়মিত তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করত। এ কারণে কিছুদিন ধরে বাবার বাড়িতেই থাকছিলেন সুমাইয়া। মঙ্গলবার রাতে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঝগড়ার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহতের মা রুমি বেগম বলেন, “রাত দেড়টার দিকে জহিরুল ইতালি থেকে ফোন দিয়ে জানায়, সুমাইয়া তিন ঘণ্টা ধরে ফোন ধরছে না। তখন আমি গিয়ে দেখি মেয়ে ঝুলছে। বিয়ের পর থেকেই ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। আমার মেয়েকে ওরা মেরে ফেলেছে।”
বাবা নাসির হাওলাদার বলেন, “জহিরুল ও তার পরিবার আমার মেয়েকে বিদেশ নেয়নি। আমরা গরিব বলে ওদের কাছে অবহেলার শিকার হয়েছি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মরে গেছে আমার মেয়ে।” রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, “মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a comment