আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা ছিল বিয়ের। বাড়িতে চলছিল আনন্দঘন প্রস্তুতি। কিন্তু সেই বিয়ের পিঁড়িতে আর বসা হলো না শুভ মণ্ডলের। অফিস থেকে ফেরার পথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এই তরুণ এনজিওকর্মী।
রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শুভ মণ্ডল (৩০) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মধ্য বানীয়ারি এলাকার অজয় মণ্ডলের ছেলে। তিনি শরীয়তপুরে একটি এনজিওতে (গাক) কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে শুভ গ্রাম উন্নয়ন কর্মে যোগদান করেন এবং তখন থেকেই শরীয়তপুরে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি তার বিয়ের জন্য কনে দেখা সম্পন্ন হয়। আগামী শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিজ গ্রামে গিয়ে বিয়ের দিন তারিখ চূড়ান্ত করার কথা ছিল।
রোববার সন্ধ্যায় প্রতিদিনের ন্যায় মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ করে অফিসে ফিরছিলেন তিনি। পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাক তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে শুভ সড়কে ছিটকে পড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
খবর পেয়ে পালং মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
এনজিও গ্রাম উন্নয়ন কর্মের সিনিয়র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, “শুভ ছয় মাস আগে আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি অত্যন্ত বিনয়ী ও দায়িত্বশীল কর্মী ছিলেন। অফিসের সবাই তাকে খুব ভালোবাসত। আগামী সপ্তাহে তার বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল। কিন্তু আজ সেই শুভ খবরের বদলে এল মৃত্যুর খবর।”
তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।” পালং মডেল থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, “খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালানো, অব্যবস্থাপনা ও দুর্বল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাই এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ।
Leave a comment