ডেনমার্ক মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য বাংলাদেশকে প্রায় ৪০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছে। ঢাকার ডেনমার্ক দূতাবাস সোমবার (১০ নভেম্বর) এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই অর্থ ডিগনিটি, আইএমএস এবং ড্যানিশ ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান রাইটস-এর সমন্বয়ে গঠিত একটি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে ব্যয় করা হবে। কনসোর্টিয়ামটি বাংলাদেশে স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মানবাধিকার রক্ষা, গণমাধ্যম স্বাধীনতা বৃদ্ধি এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কাজ করবে।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার বলেন, “এই সময়ে বাংলাদেশে নাগরিক সমাজকে শক্তিশালী করার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দায়মুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই নতুন উদ্যোগ দেশের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথে সহায়ক হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই তিনটি সংস্থা (ডিগনিটি, আইএমএস ও ড্যানিশ ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান রাইটস)দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন দেশে নাগরিক সমাজকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রচারে সহায়তা করছে। তাদের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে এই উদ্যোগের কার্যকারিতা নিশ্চিত করবে।”
ডেনমার্কের এই সহায়তা মূলত তিনটি ক্ষেত্রের উপর কেন্দ্রীভূত: মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা এবং পুনর্বাসন।স্বাধীন সংবাদ ও তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা। স্থানীয় এনজিও এবং অন্যান্য সংগঠনগুলোর মাধ্যমে নাগরিক উদ্যোগকে সমর্থন।
বাংলাদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও ইতিমধ্যেই মানবাধিকার, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য কাজ করে আসছে। ডেনমার্কের এই নতুন অর্থায়ন স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে আরও কার্যকরভাবে নাগরিক সমাজকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশে নাগরিক সমাজের শক্তিশালীকরণ, গণমাধ্যম স্বাধীনতা এবং নির্যাতিতদের পুনর্বাসনের মতো প্রকল্পগুলো মূলত দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর উন্নয়নে অবদান রাখে। ডেনমার্কের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাচ্ছে যে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রসারের ক্ষেত্রে তারা সমর্থন প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, ডেনমার্ক দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে আসছে। নতুন এই উদ্যোগ সেই ধারাকে আরও শক্তিশালী করছে এবং দেশের নাগরিক সমাজকে আরও সক্রিয় ও স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছে।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মোলার জানিয়েছেন, “আমরা আশা করি এই অর্থায়ন স্থানীয় অংশীদারদের ক্ষমতায়নে এবং জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।”
Leave a comment