১৯৩৫ সালের ১১ মে, ইতিহাসের পাতায় এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক রচিত হয় বার্লিন শহরে। ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় পৃথিবীর প্রথম টেলিভিশন প্রেরণ যন্ত্র। জার্মানির রাজধানী বার্লিন থেকে শুরু হয় টেলিভিশনের পরীক্ষামূলক নয়, পূর্ণাঙ্গ সম্প্রচার। এর মাধ্যমে আধুনিক গণমাধ্যমের এক নতুন যুগের সূচনা ঘটে, যা পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনধারায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন নিয়ে আসে।
তৎকালীন নাৎসি সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় প্রযুক্তিগত এই বিপ্লবের নেতৃত্বে ছিল জার্মান প্রকৌশলীরা। বার্লিনে স্থাপিত হয় প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র। ১১ মে তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে যন্ত্রটি চালু হলে শুরু হয় নিয়মিত সম্প্রচার—প্রথমবারের মতো ছবি, শব্দ ও তথ্য একসঙ্গে এক স্থানে বসে দেখার সুযোগ পায় মানুষ।
এই টেলিভিশন সম্প্রচারের প্রথম দর্শকদের মধ্যে ছিলেন জার্মান প্রযুক্তিবিদ, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতারা। এতে প্রচারিত হতো সংবাদ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কখনো কখনো সরকারপন্থী প্রচারণা। শুরুতে এটি সীমিত আকারে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় পৌঁছালেও পরবর্তীতে এর বিস্তার ঘটে গোটা জার্মানিতে।
যে প্রযুক্তি আজ আমাদের ঘরে ঘরে—সেটির সূচনা হয়েছিল আজ থেকে ৯০ বছর আগে, সেই ঐতিহাসিক দিনেই। তখন হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি, একটি বাক্সের মধ্যে বসেই মানুষ একদিন বিশ্বজুড়ে খবর, বিনোদন এবং শিক্ষার সমস্ত জানালা খুলে দিতে পারবে।
বার্লিন থেকে শুরু হয়ে এই টেলিভিশন প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এর বৈশ্বিক বিস্তার ঘটে দ্রুত গতিতে। এভাবেই ১৯৩৫ সালের ১১ মে দিনটি হয়ে উঠেছে গণমাধ্যম বিপ্লবের অন্যতম প্রধান ভিত্তিস্থল, যেখান থেকে আধুনিক টেলিভিশনের পথচলা শুরু হয়।
Leave a comment