ঈদের আগে বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে পোশাক খাতের শ্রমিকদের বিক্ষোভ আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা চেয়ে রাস্তায় নামলেও সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মালিকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।
অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা মালিকদের দায়িত্ব। সরকার এই খাতে কোনো আর্থিক সহায়তা দেবে না। তবে যদি শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, তাহলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
অন্যদিকে, কারখানা মালিকরা দাবি করেছেন যে তারা শ্রমিকদের দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছেন। অনেক মালিকই অর্থসংকটে ভুগছেন এবং ব্যাংক থেকে ঋণ না পাওয়ায় তারা বেতন-বোনাস পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, শুধু বেতন-বোনাসই নয়, এবারের ঈদে তারা ছুটি বৃদ্ধিরও দাবি জানাচ্ছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে, সড়ক অবরোধ করছে। গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভারসহ পোশাকশিল্প অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে এই আন্দোলন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
সম্প্রতি আলোচিত গার্মেন্টস মালিক ও অভিনেতা অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন এজে আই ও এবি গ্রুপেও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিক সংগঠন এবং বিজিএমইএ-র একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ-তে কিছু লোক শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মিশে গার্মেন্টস শিল্পকে রাজনীতির মাঠে পরিণত করতে চাইছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম অনন্ত জলিলের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার দাবিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত সাত মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বেশিরভাগ কারখানাই এখনও চালু রয়েছে।
শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গার্মেন্টস মালিকদের উচিত শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে আরও আন্তরিক হওয়া। তারা দাবি করেছেন, ঈদের আগে যেন শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হয় এবং ছাঁটাই বন্ধ রাখা হয়। তবে এখনও অনেক কারখানায় এ সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
গার্মেন্টস শ্রমিকদের এই ন্যায্য দাবিগুলো যথাযথভাবে পূরণ না হলে পরিস্থিতি আরও অস্থির হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Leave a comment