Home আন্তর্জাতিক পাকিস্তানে পৃথক তিন হামলায় নিহত ২২, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন করে প্রশ্ন
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানে পৃথক তিন হামলায় নিহত ২২, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন করে প্রশ্ন

Share
Share

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পৃথক তিনটি সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত অস্থিতিশীলতা নতুন করে এই ঘটনা সামনে এনেছে।

সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি ঘটেছে বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটায়। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের শাহওয়ানি স্টেডিয়ামে একটি রাজনৈতিক সমাবেশ শেষে স্টেডিয়ামের বাইরে পার্কিং লটে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় ১১ জন নিহত ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণটি ঘটে বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি-মেনগাল (বিএনপি-এম)-এর প্রতিষ্ঠাতা আতাউল্লাহ মেনগালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ শেষে। সমাবেশ শেষ করে যখন জনতা স্টেডিয়াম ত্যাগ করছিল, ঠিক তখনই হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়।

দলের শীর্ষ নেতা সাজিদ তারিন জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে তাদের বহু নেতা-কর্মী হতাহত হয়েছেন। বেলুচিস্তানের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হামজা শফাৎ বলেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মঘাতী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এলাকা ঘিরে ফেলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।

একই দিনে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে আরেকটি জঙ্গি হামলায় অন্তত ছয় সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হামলার পর সেনারা পাল্টা অভিযান চালায়। গত চার দিনে এ ধরনের অভিযানে ৫০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দাবি করেছে।

প্রদেশটি দীর্ঘদিন ধরেই তালেবানপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলের অস্থিতিশীলতা পাকিস্তানের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

এছাড়া, বেলুচিস্তানের ইরান সীমান্তবর্তী এলাকায় আরেকটি হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তবে এই ঘটনার দায় এখনো কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

পাকিস্তানে ধারাবাহিক সহিংসতা রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও গভীর করছে। কোয়েটার হামলা শুধু রাজনৈতিক কর্মীদের টার্গেট করেই নয়, বরং আঞ্চলিক জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী টানাপোড়েনকেও নতুন করে উসকে দিলো।

বিশ্লেষকদের মতে, ক্রমবর্ধমান হামলা পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ফেলছে। বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ার মতো প্রদেশগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করলেও সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি কমছে না।

দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলও উদ্বিগ্ন। বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া শুধু পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই হামলাগুলো পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don't Miss

থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে গোলাগুলি, দু’দিনে নিহত ৭

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে চার মাস পর আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে অন্তত...

ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা

আজ মঙ্গলবার ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ইং। ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বাংলা। ১৭ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি। বছর শেষ হতে আরো ২২ দিন বাকি রয়েছে।...

Related Articles

দশ লাখ ডলারের ‘গোল্ড কার্ড’ অভিবাসন ভিসা চালু  করলো যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত নাগরিকত্ব পেতে আগ্রহী ধনী বিদেশিদের জন্য নতুন ভিসা কর্মসূচি চালু...

কঠোর নিরাপত্তায় আল-আকসায় ইসরায়েলিদের অনুপ্রবেশ, উত্তেজনা চরমে

অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই প্রায় দুই শতাধিক...

মিয়ানমারের হাসপাতালে বিমান হামলা: নিহত কমপক্ষে ৩১

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি হাসপাতালে সামরিক জান্তার বিমান হামলায় কমপক্ষে...

মালয়েশিয়ায় দুই অভিযানে ৪৭ বাংলাদেশি আটক

মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু রাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুটি পৃথক অভিযানে বাংলাদেশিসহ ৫৬...