জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও আসন্ন নভেম্বরে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ রাজধানীর পল্টন মোড়ে যৌথ সমাবেশ করছে ইসলামী দলসমূহের জোটভুক্ত আটটি রাজনৈতিক দল। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টায় পল্টন মোড়ে এ সমাবেশ শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সভাপতিত্ব করবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম (পীর সাহেব চরমোনাই)।
সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামী ও রাজনৈতিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। উপস্থিত থাকবেন—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক,খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল হক চাঁন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ প্রধানসহ আট দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
দলগুলো দাবি জানিয়েছে, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নই হবে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পূর্বশর্ত।” সমাবেশে ঘোষিত পাঁচ দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা ও তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারি আদেশ জারি ,নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করে জনগণের মতামত যাচাই প্রতিনিধিত্বমূলক (PR) ভোট পদ্ধতি চালু করে নির্বাচনকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা ,জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
দলগুলো বলছে, এই দাবিগুলো পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে। সমাবেশ সফল করতে সোমবার (১০ নভেম্বর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আট দলের লিয়াজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সমাবেশের মঞ্চ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ও গণমাধ্যম সমন্বয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
লিয়াজো কমিটির এক শীর্ষ নেতা জানান, “এ সমাবেশের মাধ্যমে আমরা দেশের জনগণের সামনে একটি বিকল্প ইসলামী জাতীয় ঐক্য প্রদর্শন করতে চাই। জুলাই সনদের বাস্তবায়ন দেশের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা ঠিক করবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পল্টনের এই সমাবেশকে ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক ঐক্যের এক গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এমন সমাবেশ রাজধানীর রাজনৈতিক তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন । সমাবেশকে ঘিরে আয়োজক দলগুলো জানিয়েছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক অধিকারভিত্তিক। ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন,“আমরা কোনো সংঘাত চাই না। জনগণের দাবি ও ন্যায্য অধিকার তুলে ধরতেই এই কর্মসূচি।”
রাজধানীর পল্টন মোড়ে আজকের এই সমাবেশে দেশের ইসলামপন্থি রাজনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ জোটের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এটি কেবল একটি সমাবেশ নয়—এটি হতে পারে “ইসলামী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর নতুন ঐক্য ঘোষণার মঞ্চ।”
Leave a comment