বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পারমাণবিক চুক্তি থেকে লাভ , ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় জমি দখল, মুদ্রা পাচাররে মতো একাধিক অভিযোগ তুলেছে।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেন। তবে, টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে বলেছেন যে , এসব অভিযোগ কোনো সুষ্ঠু প্রক্রিয়া মেনে পরিচালিত হয় নি।
সরকারি সংস্থাগুলি প্রাসঙ্গিক নথি ও বাস্তবতার নিরিখে তদন্তের বদলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করছে। এরপর, তাঁর আইনজীবী “স্টিফেন হারউড” কর্তৃক পাঠানো একটি চিঠিতে অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ বলে দাবী জানান
টিউলিপের আইনজীবী স্টিফেন হারউডের মতে, টিউলিপ সিদ্দিকের যুক্তরাজ্যে থাকা কিংস ক্রস এলাকার ফ্ল্যাটটি ২০০৪ সালে তাঁর গডফাদার, আবদুল মোতালিফের কাছ থেকে অর্জিত। মোতালিফ একসময় আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত ছিলেন, তাঁর কাছ থেকে প্রাপ্ত সম্পদকে উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই প্রেক্ষাপটে হারউড জানান, অভিযোগ অনুযায়ী কোনো চুক্তিবদ্ধ লেনদেন বা তছরুপ করা অর্থ ব্যবহার করে সম্পদ ক্রয়ের ধারণাটি অসত্য ।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, টিউলিপ সিদ্দিক ব্যক্তিগতভাবে মস্কো সফরে গিয়েছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক আনুষ্ঠানিক ছবির জন্য পোজ দিয়েছিলেন। তবে, তিনি কোনো সরকারি আলোচনার অংশ ছিলেন না। সরকারী পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টিও কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়, বরং তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা যায়।এ ছাড়া ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় প্লট পাওয়ার জন্য প্রভাব খাটানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বলেছেন, সেখানে কখনো তাঁর জমি ছিল না।
দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন উল্লেখ করেছেন, “টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতে প্রমাণিত হবে।”
বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির জটিল প্রেক্ষাপটে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কের বিষয়। আইনজীবী স্টিফেন হারউড ও টিউলিপ সিদ্দিকের যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ব্যাখ্যা স্পষ্ট করে যে, অভিযোগগুলো সঠিক প্রক্রিয়া ও যথাযথ প্রমাণবিহীন। তবে, দুর্নীতি দমন কমিশনের এ তদন্তের ফলাফল কিভাবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিচার ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলে, তা শুধুমাত্র ভবিষ্যতে সময়ই বলবে।
Leave a comment