ইসরায়েলি দখলদারের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনের পরিচিত চলচ্চিত্রকর্মী, সমাজকর্মী ও শিক্ষক ওদে মুহাম্মদ হাদালিন।
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় মাসাফের ইয়াত্তার এলাকার উম্ম আল-খাইর গ্রামের কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সংবাদকর্মীরা নিশ্চিত করেছে। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ সংবাদ উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুসারে, দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন চল্লিশোর্ধ্ব হাদালিন।
এ বছরের অস্কারজয়ী প্রামাণ্যচিত্র ‘নো আদার ল্যান্ড’-এ তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। এই ডকুমেন্টারিতে মাসাফের ইয়াত্তার অঞ্চলের ফিলিস্তিনিদের নিপীড়নের বাস্তবচিত্র উঠে এসেছে, যা বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়।
হাদালিনের বন্ধু ও সহনির্মাতা বাসেল আদরা সামাজিক মাধ্যমে তার বিয়োগের খবর জানিয়ে লিখেছেন, ‘আজ আমার বন্ধুকে খুন করা হলো। কমিউনিটি সেন্টারের সামনে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।
সেই সময় একজন দখলদার খুব কাছ থেকে তার বুকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। আমাদের একে একে নিঃশেষ করা হচ্ছে।’ ‘নো আদার ল্যান্ড’-এর আরেক নির্মাতা ও ইসরায়েলি সাংবাদিক ইউভাল আব্রাহাম ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করে হামলাকারীর নাম ইনোন লেভি বলে দাবি করেছেন।
আব্রাহাম জানান, এই ব্যক্তি আগেই সহিংসতা ও চরমপন্থার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ। ভিডিও শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘দেখুন, দখলদাররা কিভাবে উন্মাদের মতো গুলি চালায়।’
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার পরপরই আটক করা হয়েছে ইনোন লেভিকে। এ ছাড়া আরো চারজন ফিলিস্তিনি ও দুই বিদেশিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গুলিতে আহত হয়েছেন আরো একজন ফিলিস্তিনি, তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হাদালিন ছিলেন হেবরনের দক্ষিণাঞ্চলের মাসাফের ইয়াত্তার অঞ্চলের বাসিন্দা। ১৯৮০-এর দশক থেকে এই অঞ্চলটিকে ইসরায়েল ‘সামরিক ফায়ারিং জোন’ ঘোষণা করে রেখেছে, ফলে বারবার উচ্ছেদ ও দমনপীড়নের শিকার হচ্ছেন এখানকার মানুষ।
Leave a comment