আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুইটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। একটি বগুড়া-৬ এবং অন্যটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-১৭। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ দেশের একটি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার পর তারেক রহমানের নির্বাচনী আসন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, “তারেক রহমান বগুড়া-৬ ও ঢাকা-১৭—এই দুই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটি দলের কৌশলগত সিদ্ধান্ত।”
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থিতা নিয়ে চলমান রাজনৈতিক জল্পনার অবসান ঘটল। এর আগে এই আসনটি নিয়ে বিএনপির শরিক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-এর চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থের নাম আলোচনায় ছিল। তিনি নিজেও একাধিকবার ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭ আসনের পরিবর্তে ভোলা-১ আসন থেকে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে ভোলা-১ আসনে তার পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আন্দালিব রহমান পার্থের জন্মস্থান ভোলা। শুরুতে ঢাকা-১৭ আসনে তার প্রার্থিতা ঘিরে এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারও দেখা গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি জন্মস্থান ভোলাতেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন। বিএনপি নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকা-১৭ আসন রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত সংসদীয় এলাকা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫, ১৮, ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকা নিয়ে গঠিত এই আসনটি গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একটি অংশ নিয়ে বিস্তৃত। কূটনৈতিক এলাকা, অভিজাত আবাসিক অঞ্চল এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা থাকায় রাজনৈতিকভাবে আসনটির গুরুত্ব বরাবরই বেশি।
অন্যদিকে বগুড়া-৬ আসন বিএনপির ঐতিহ্যবাহী ও শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। দলীয় রাজনীতিতে বগুড়ার ভূমিকা দীর্ঘদিনের। তারেক রহমানের এই আসন থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তকে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রতীকী ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, দুটি আসন থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তের পেছনে একাধিক রাজনৈতিক হিসাব কাজ করছে। একদিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলীয় উপস্থিতি ও শক্ত অবস্থান জানান দেওয়া, অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী এলাকায় দলের সাংগঠনিক শক্তি আরও সুদৃঢ় করাই এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য।
Leave a comment