মধ্যপ্রাচ্যে আবারও বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মার্কিন সাময়িকী ফরেন পলিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ইরান ও ইসরায়েল নতুন করে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি আগস্টের শেষ দিকেই ইসরায়েল সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরানও সম্ভাব্য আগ্রাসনের আশঙ্কায় প্রস্তুতি জোরদার করছে।
জুনের যুদ্ধ থেকে শিক্ষা –
জুনে শুরু হওয়া সংঘাতে ইরান তুলনামূলক ধীরগতিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল। তবে এবার তেহরান শুরুতেই শক্তিশালী ও নির্ণায়ক আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানের লক্ষ্য হবে ইসরায়েলের সামরিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করা। এর ফলে আসন্ন সংঘাত পূর্বের যেকোনো যুদ্ধের তুলনায় অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী ও প্রাণঘাতী হতে পারে।
ইসরায়েলের জুনের যুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল—
• ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা দুর্বল করা
• যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে টেনে আনা
• ইরানের শাসকগোষ্ঠীকে অস্থিতিশীল করা
তবে এসব লক্ষ্য পূর্ণভাবে সফল হয়নি। ইরান দ্রুত বিকল্প কমান্ড কাঠামো গড়ে তোলে এবং পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুতর ক্ষতি করে।
ইসরায়েলের সীমাবদ্ধতা-
জুনের সংঘাতে মাত্র ১২ দিনের মধ্যেই ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ২৫ শতাংশ ব্যবহার করে ফেলে। যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহায়তা ছাড়া যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করা ইসরায়েলের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
তবুও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এবং সেনাপ্রধান ইয়াল জামির ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, জুনের যুদ্ধ ছিল কেবল প্রথম ধাপ। তাদের মতে, ইরানকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার গড়ে তোলার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এজন্য পুরনো ‘ঘাস কাটা কৌশল’—অর্থাৎ প্রতিপক্ষকে নিয়মিত আঘাত করে দুর্বল রাখা—আবারও সক্রিয় হতে পারে।
ইরানের পাল্টা হুঁশিয়ারি-
অন্যদিকে, ইরান এবার শুরুতেই ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্ক করে লিখেছেন, “আবার আগ্রাসন হলে প্রতিক্রিয়া হবে আরও কঠিন, আর তা আড়াল করা সম্ভব হবে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান-
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ঘুরছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানকে ঘিরে। তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে যুদ্ধে জড়াতে অনিচ্ছুক হলেও সীমিত হামলা চালিয়ে ইতোমধ্যে আংশিকভাবে সম্পৃক্ত হয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এবার তার সামনে দুটি পথ খোলা—
(.)পুরোপুরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া
(.) অথবা একেবারে সরে দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের চাপ প্রতিহত করা
তবে ফরেন পলিসি মনে করছে, ট্রাম্প এখন পর্যন্ত দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন।
Leave a comment