বাংলাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ টাঙ্গুয়ার হাওরে আবারও শুরু হয়েছে অবৈধ মাছ শিকার। নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরার অভিযোগে আটজনকে আটক করেছে টাঙ্গুয়ার হাওর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কমিটির নেতা ও আনসার সদস্যরা।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতের এই অভিযানে আটককৃতদের মধ্যে সাতজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। বয়স কম থাকায় এক কিশোরকে মুচলেকা নিয়ে তার অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটক ব্যক্তিদের পরিচয় হল —
• আব্দুল গনির ছেলে খোকন মিয়া (৪৫)
• মানিক মিয়ার ছেলে মিলন মিয়া (৩৪)
• সাধির মিয়ার ছেলে পিয়াস (২১)
• নুরু মিয়ার ছেলে রিফাত (১৮)
• শুক্কুর আলীর ছেলে তরিক মিয়া (৩৫)
• জয়নাল উদ্দিনের ছেলে হোসেন খা (৩৪)
• শাহনুর মিয়ার ছেলে সারোয়ার (১৯)
• টিটন মিয়া (১৪)
রাত ১০টার দিকে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান মানিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় জব্দ হওয়া প্রায় ৩ হাজার মিটার নিষিদ্ধ জাল জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। ইউএনও মেহেদী হাসান মানিক বলেন, “টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে মাছ শিকারকারীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত RAMSAR Wetland, যা জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। বর্ষা মৌসুমে হাওর ভরে ওঠে নানা প্রজাতির মাছ ও অতিথি পাখিতে। অথচ প্রতিবছরই কিছু অসাধু ব্যক্তি কারেন্ট জাল ও অন্যান্য নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করে হাওরের পরিবেশের জন্য হুমকি তৈরি করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবৈধ কার্যক্রম শুধু মাছের প্রজননকেই ব্যাহত করছে না, বরং হাওরের সামগ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি করছে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের ঘটনাটি আবারও প্রমাণ করল যে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কঠোর নজরদারি জরুরি। প্রশাসনের দাবি, অভিযান নিয়মিত চালু থাকলে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে।
Leave a comment