শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক যুবককে পিটিয়ে হাত–পা ভেঙে দেওয়া এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুই চোখ খুঁচিয়ে অন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার মোহর আলী শিকদারকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত রমজান মোল্লা (৩৮) বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্ত হিসেবে স্থানীয় সুমন শিকদারের নাম উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনেরা। এলাকাবাসীর দাবি, সুমন দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। হামলার পর উত্তেজিত জনতা বিকেলে সুমনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে তিনটি বসতঘর ও দুটি দোকান পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর শত শত মানুষ সুমনের বাড়ি ঘেরাও করেন। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও উত্তেজিত জনতা তাঁদের আগুন নেভাতে বাধা দেয়। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বিকেল তিনটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তানভির আহমেদ বলেন, রমজানের দুটি চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁর হাত ও ডান পা-ও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, রমজান মোল্লা গতকাল আটরশি দরবার শরিফে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। আজ দুপুরে খবর পান, তাঁকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, সুমনের সঙ্গে রমজানের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ আহমেদ বলেন, সুমন শিকদারের নেতৃত্বে কয়েকজন এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা একজন সহযোগীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। তাঁকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে।
এলাকার মানুষ বলছেন, মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে কুখ্যাত সুমনের দৌরাত্ম্যে তারা দীর্ঘদিন ধরেই ভীত ছিলেন। এবার নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসী তাঁর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। তদন্তে পুলিশ ঘটনার প্রকৃত কারণ ও অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।
Leave a comment