চট্টগ্রামের বাকলিয়া এক্সেস রোডে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন একটি প্রাইভেট কারের দুই আরোহী। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটার দিকে এই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন গাড়িচালক মোহাম্মদ মানিক (৩০) ও অপরজন আবদুল্লাহ (৩২)। তবে কারা, কেন এই হামলা চালিয়েছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া এক্সেস রোডের দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ তিন-চারটি মোটরসাইকেল পেছন থেকে গাড়িটিকে ধাওয়া করে এবং মুহূর্তেই শুরু হয় এলোপাতাড়ি গুলি। প্রতিক্রিয়ায় গাড়ির ভেতর থেকেও গুলি চালানো হয়, কিন্তু মোটরসাইকেলে থাকা হামলাকারীরা সংখ্যায় ও অস্ত্রে ছিল বেশি। তারা সবাই হেলমেট পরা ছিল, ফলে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে যায়।
গুলিতে প্রাইভেট কারের পেছনের কাচ গুঁড়িয়ে যায়, গায়ে অসংখ্য গুলির চিহ্ন তৈরি হয়। পাঁচ থেকে ছয় মিনিট ধরে চলা এই গোলাগুলির পর মোটরসাইকেল আরোহীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। স্থানীয়রা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, তবে চিকিৎসকরা মানিক ও আবদুল্লাহকে মৃত ঘোষণা করেন। গাড়িতে থাকা আরও চারজন আহত হয়েছেন, তবে তাদের পরিচয় জানানো হয়নি।
নিহতদের পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। মানিকের মা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিলাপ করতে করতে বলেন, আমি ময়নাতদন্ত চাই না, মামলা করব না, শুধু ছেলের লাশটা দিয়ে দেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর ছেলের কোনো শত্রু ছিল না।
এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন ব্রিজ এলাকায় জায়গা দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরে এ হামলা হয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে, ১৫ মার্চ কথিত সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিশোধ হিসেবেও এই হামলা হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার পর হুমকি পাওয়ার অভিযোগে আকরামের স্ত্রী রুমা আক্তার একটি মামলা করেছিলেন, যেখানে সাজ্জাদের স্ত্রী ও হাসানসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। আকরামের গাড়ির রঙ ও হামলার শিকার গাড়ির রঙ একই হওয়ায় ভুলবশত এই হামলা হয়েছে কি না, তা নিয়েও তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সুলতানা জানান, গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। তদন্ত চলছে, আমরা প্রতিটি সম্ভাব্য দিক বিবেচনা করে দেখছি।
Leave a comment