বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এজাজ আহমেদ (৩২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।
এজাজ আহমেদের বাবা শাহ আলম অভিযোগ করেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি যৌথ বাহিনীর পরিচয়ে তাঁর ছেলেকে হাজারীবাগ থেকে আটক করা হয় এবং পরে মোহাম্মদপুর থানার একটি ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি দাবি করেন, “পুলিশি নির্যাতনের কারণে এজাজ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে ধানমন্ডির জাপান-ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার (১৪ মার্চ) ভোরে পুলিশ আবার তাঁকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে যায়। আজ শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।”
এজাজের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ঈদের পর বার এট ল সম্পন্ন করতে তাঁর লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল।
পুলিশ জানায়, এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার অভিযোগে একটি সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে। সেই মামলার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তবে নির্যাতনের অভিযোগ নাকচ করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান। তিনি বলেন, “এজাজ আহমেদ ধানমন্ডি এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সহযোগী ছিলেন। ডাকাতির প্রস্তুতি মামলায় ১০ ফেব্রুয়ারি যৌথ বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। থানায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে, যেখানে সবকিছু রেকর্ড করা হয়। নির্যাতনের কোনো প্রশ্নই আসে না।”
ওসি আরও জানান, “ডিবির সহযোগিতায় গতকাল (১৪ মার্চ) এজাজকে জাপান-ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আগে থেকেই কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।”
এজাজ আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবার ও কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
Leave a comment