গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বামীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন গৃহবধূ ঝর্ণা বেগম (৩৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নিজ ঘরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহত ঝর্ণা বেগম যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হাফেজ সিদ্দিকুর রহমান তালুকদারের স্ত্রী। প্রতিবেশী শাওন জানান, ঘটনার সময় হঠাৎ করে ঝর্ণা বেগমের কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। দরজা বন্ধ থাকায় প্রথমে জানালার কাঁচ ভেঙে ভেতরে উঁকি দিলে দেখা যায় ধোঁয়া আর শরীর পোড়ার গন্ধ। পরে স্থানীয়রা জোর করে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে মেঝেতে ঝর্ণা বেগমের দগ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশ এসে কেরোসিনের বোতল ও একটি গ্যাস লাইট উদ্ধার করে।
ঝর্ণা বেগম বড় ছেলে হাফেজ সাকিব তালুকদার (১৮) কে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। তার ছোট ছেলে ইউসুফ তালুকদার (১০) পাশের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা গ্রামে একটি মাদরাসায় হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করে।
বড় ছেলে সাকিব বলেন, “বাবা প্রায় ১০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। সর্বশেষ গতবছর দেশে এসেছিলেন। আমি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছি, শেষ হলে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল। বাবা আমার, মা আর ছোট ভাইয়ের পাসপোর্ট নিয়ে গেছেন। মা কেন এমনটা করলেন, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।”
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মাসুদ তালুকদার বলেন, “ঝর্ণা বেগম একজন পর্দানশীল ও সহানুভূতিশীল নারী ছিলেন। এলাকায় সবার বিপদে পাশে দাঁড়াতেন। তাদের পুরো পরিবারই দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। আগুনে তার শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, মুখমণ্ডল বিকৃত হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো কোনো অভিমান থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।”
তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a comment