খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকোয়েট হলে শনিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত ‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহভাবে অবনতি হয়েছে। তাঁর ভাষায়, কখনো সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা, কখনো সাধারণ মানুষকে হত্যা—সব মিলিয়ে দেশ যেন এক ‘মগের মুল্লুকে’ পরিণত হয়েছে।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজিত এই সভায় হাফিজ উদ্দিন বলেন, উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ছাড়া কেউ গণ–আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেননি। শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী অপরিবর্তিত রয়েছে, এবং একটি রাজনৈতিক দল—যারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল—গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের প্রতিনিধিদের বসাতে সক্ষম হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা শুধু লড়াই ও ত্যাগ স্বীকার করলেও তার সুফল পায়নি বলে তিনি দাবি করেন।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তুলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ হলেও স্বাধীনতার পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ নিজেদের কল্পিত ভূমিকা প্রচার করেছে এবং সাধারণ জনগণের অবদান আড়ালে রেখেছে। তাঁর মতে, অধিকাংশ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন গ্রামীণ, খেটে খাওয়া মানুষ; অথচ স্বাধীনতার পর বড় শহরের অনেকেই নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে আলোচনায় উঠে আসে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের প্রস্তাবিত পিআর সিস্টেমের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকানোই উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পছন্দের ব্যক্তিকেই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে এসেছে, তাই পিআর সিস্টেম দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান এবং খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল আলম। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের খুলনা মহানগরের সভাপতি শেখ আলমগীর হোসেন।
Leave a comment