বাংলা একাডেমির অভিধানে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ‘ইদ’ বানান বিতর্কের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। এবার একাডেমির পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা কার্ডে ‘ঈদ মোবারক’ লেখা হয়েছে, যা নেটিজেনদের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
বাংলা একাডেমির ২০১৬-১৭ সালের সংস্করণে ‘ঈদ’ বানান পরিবর্তন করে ‘ইদ’ করা হলে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। প্রতি বছর ঈদের সময় এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ‘ঈদ’ নাকি ‘ইদ’ হবে, তা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ যুক্তি তুলে ধরে। তবে এবার বাংলা একাডেমি এ বিতর্ক নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম স্বাক্ষরিত ঈদকার্ড তাদের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়, যেখানে ‘ঈদ মোবারক’ লেখা ছিল। এতে অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেন। নেটিজেনদের মধ্যে সিফাতুল্লাহ আফিফ বঙ্গ মন্তব্য করেন, ‘‘ইদ’ লেখার চাইতে ‘ঈদ’ লেখাটাই বেশি ভালো লাগে। সুন্দর লাগে। মনের মধ্যে একটা ভাব আসে।’’
তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একাডেমির অভিধান থেকে কি তাহলে ‘ইদ’ পুরোপুরি বাদ যাচ্ছে? এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, “এটা নিয়ে কিছু ভাবছি না।” তিনি জানান, বিতর্কিত কিছু শব্দের বানান পরিবর্তন নিয়ে একাডেমি কাজ করছে। ঈদের পর নতুন একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা সুপারিশ করলে বাংলা একাডেমির পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন আনা হবে।
ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি এসব বিতর্কিত বানান নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। এটি শুধু ব্যাকরণগত নয়, বরং ঐতিহ্যগত বিষয়ও জড়িত।
তিনি আরও জানান, আগেও একটি কমিটি করা হয়েছিল, তবে সেটি কার্যকরভাবে কাজ করতে পারেনি। ঈদের পর নতুন কমিটি করে গণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুধু ‘ঈদ’-‘ইদ’ নয়, ‘নবী’ শব্দে দীর্ঘ ঈ-কার ও হ্রস্ব ই-কার ব্যবহারের যুক্তিতর্কও দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। একইভাবে, ‘শহিদ’ নাকি ‘শহীদ’—এসব বিতর্কও সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা একাডেমি।
বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন সংস্করণে এসব বানান পর্যালোচনা করে পরিবর্তন বা সংযোজনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Leave a comment