রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মকবুল হোসেন।
৮৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলের বুকজুড়ে ছিল অসংখ্য গুলির দাগ। ওকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বেঁচে থাকতে চাইতাম ছেলের চাকরি হতে দেখবো। সেটা আর হলো না। এখন শুধু চাই, যারা আমার ছেলেকে মেরেছে তাদের বিচার যেন দেখে যেতে পারি।”
২০২৫ সালের জুলাই মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংঘটিত নৃশংস হামলায় প্রাণ হারান সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ঘটনাটি দেশজুড়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দেয়।
তদন্ত শেষে গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল বেরোবির সাবেক উপাচার্য হাসিবুর রশীদসহ মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে ছয়জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাকি ২৪ জন এখনো পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে, ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করা হয় এবং ২৪ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে। মামলার সূচনা বক্তব্যে প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। একটি নিরপরাধ তরুণকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, যার পেছনে ছিল প্রভাবশালী একটি চক্র।”
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী সপ্তাহে। এ সময় আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হবে। নিহত সাঈদের পরিবার বলছে, তাদের একমাত্র দাবি—বিচার দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হোক।
Leave a comment