আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
সুলতান মাহমুদ শরীফ দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে লন্ডন থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তখন তিনি ছিলেন যুক্তরাজ্যে গড়ে ওঠা ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাকশন কমিটি’র অন্যতম সক্রিয় সদস্য। কমিটির হয়ে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লবিং, প্রচার ও সমর্থন আদায়ের কাজ করেন। তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
রাজনৈতিক জীবনের বাইরেও তিনি প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সামাজিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত ছিলেন। লন্ডনের বাংলাদেশ সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সামাজিক অঙ্গনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তাঁকে একটি আস্থার জায়গায় পরিণত করেছিল।
সুলতান শরীফের বাড়ি বরিশাল শহরে। মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। প্রবাসী বাংলাদেশি মহলে তাঁর মৃত্যু গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। রাজনৈতিক সহকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা তাঁর অবদান স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক জানিয়েছেন, সুলতান শরীফের জানাজার সময় এখনো নির্ধারিত হয়নি। দলের নেতা-কর্মী ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তাঁর মৃত্যুতে প্রবাসী রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দেশের জন্য লড়াই করা এবং প্রবাসীদের সংগঠিত করতে যিনি সারা জীবন নিবেদিত ছিলেন, সেই সুলতান মাহমুদ শরীফ আজ নেই—এ আক্ষেপে ভরে উঠেছে লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের হৃদয়।
Leave a comment