গণ অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে রাশেদ খানের পদত্যাগের পর সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুনকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের এক অনলাইন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
হাসান আল মামুন নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্ট্যাটাসে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আস্থা ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করে বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় গণ অধিকার পরিষদকে সংগঠিত ও সক্রিয় রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
গণ অধিকার পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে দল পরিবর্তন করেছেন—এমনটাই রাজনৈতিক মহলে আলোচিত হচ্ছে। তার দলত্যাগের পর থেকেই গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদটি শূন্য হয়ে পড়ে এবং কে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নেবেন, তা নিয়ে দলীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল।
শেষ পর্যন্ত দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক সক্ষমতার কথা বিবেচনায় এনে হাসান আল মামুনকে এই দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি এর আগে দীর্ঘদিন ধরে গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
হাসান আল মামুন রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মুখ নন। তিনি ২০১৮ সালের বহুল আলোচিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক ছিলেন। ওই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে তার পরিচিতি বাড়ে। পরবর্তীতে গণ অধিকার পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়ায় তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন এবং দলটির সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বলে নেতাকর্মীরা জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশেদ খানের পদত্যাগের পর দলটির সামনে একটি সাংগঠনিক শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন দেশের রাজনীতিতে জোট, নির্বাচন ও প্রতীককেন্দ্রিক আলোচনা তীব্র আকার ধারণ করেছে, তখন গণ অধিকার পরিষদের মতো একটি তুলনামূলক ছোট কিন্তু সক্রিয় দলের জন্য নেতৃত্বের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মামুনের দায়িত্ব হবে সাংগঠনিক কার্যক্রম সচল রাখা, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে
দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করা এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা। একই সঙ্গে রাশেদ খানের দলত্যাগের পর যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
Leave a comment