ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে শিশুদের সৌন্দর্যের প্রতি অস্বাভাবিক ঈর্ষা থেকে নিজের সন্তানসহ চার শিশুকে হত্যার অভিযোগে পুনম নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাগুলো দীর্ঘ সময় ধরে দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হলেও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এক শিহরণ জাগানো সত্য—সাজগোজ করা বা দেখতে সুন্দর শিশুদের সহ্য করতে পারতেন না অভিযুক্ত নারী।
পুলিশ জানায়, পুনমের হত্যার ধরন ছিল একই—পানিভর্তি চৌবাচ্চায় মাথা ডুবিয়ে হত্যা। ২০২৩ সালে প্রথম তিনি ননদের মেয়েকে হত্যা করেন। ঘটনাটি দেখে ফেলায় সে বছরের মধ্যেই হত্যা করেন নিজের ছেলেকে। চলতি বছরের আগস্টে সিওয়া গ্রামে ‘নিজের চেয়ে সুন্দর’ মনে হওয়া আরেক শিশুকেও একইভাবে হত্যা করেন।
সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডটি ঘটে পানিপথের নৌলথা গ্রামে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। ছয় বছরের ভাতিজি বিধিকে দেখে পুনমের মনে হয়—সে তার চেয়ে বেশি সুন্দরী। এরপর সুযোগ পেয়ে শিশুটিকে নিয়ে যান বাড়ির প্রথম তলার একটি স্টোররুমে এবং পানিভর্তি চৌবাচ্চায় ডুবিয়ে হত্যা করেন।
বিধির পরিবার তখন বরযাত্রার সঙ্গে অনুষ্ঠানে এসেছিলো। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে শিশুটির নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর দাদি ওমবতী স্টোররুমের দরজা বাইরে থেকে আটকানো অবস্থায় পান। ভেতরে ঢুকে দেখেন, পানিভর্তি চৌবাচ্চায় বিধির মাথা ডুবানো।শিশুটিকে তৎক্ষণাৎ এনসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, তবে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
বিধির বাবা সন্দীপ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ পুনমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, আগে আরও তিনটি শিশুকে একইভাবে হত্যা করেছেন এবং কারণ হিসেবে তাদের সৌন্দর্যের প্রতি তার গভীর ঈর্ষার কথা উল্লেখ করে । তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, পুনমের আচরণে মনস্তাত্ত্বিক অস্বাভাবিকতা স্পষ্ট। প্রতিটি ঘটনার পর তিনি সাধারণ আচরণ করতেন, ফলে পরিবার ও আশপাশের মানুষ ঘটনাগুলোকে দুর্ঘটনা বলে ধরে নেন।
Leave a comment