পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত পুকুরের পাড়ে ভাসমান অবস্থায় বস্তাটি উদ্ধার হওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এতে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি উপজেলা পরিষদের একটি আবাসিক ভবনে থাকা একটি মা কুকুর আটটি ছানা জন্ম দেয়। রোববার সন্ধ্যার পর ছানাগুলো হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে গেলে মা কুকুরটি সারারাত বিভিন্ন বাসার সামনে ঘুরে বেড়ায় এবং অস্বাভাবিকভাবে কান্নাকাটি করে। খাবার গ্রহণ না করায় ও মানসিক আঘাতে কুকুরটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর জানান, সোমবার সকালে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন মোটরসাইকেলে বের হওয়ার সময় ছানাগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না জানান। তবে পাশে থাকা নয়নের ছোট ছেলে জানায়, তার মা নিশি বেগম কুকুরছানাগুলোকে বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়ন দ্রুত সরে পড়েন। পরে ভাসমান বস্তা উদ্ধার করে খুলতেই দেখা যায়—সবকটি ছানাই ততক্ষণে মারা গেছে।
যোগাযোগ করা হলে কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, “এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এর বাইরে কিছু বলতে পারছি না।” উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন জানান, “এ ধরনের নিষ্ঠুরতা অকল্পনীয় ও নিন্দনীয়। মা কুকুরটিও প্রচণ্ড মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইউএনও মহোদয় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Leave a comment