গাজীপুরের টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে, তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ি নেজাম আয়োজিত চলমান পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমার প্রথম তিন দিনে পাঁচ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) আয়োজক কমিটি এসব মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনায় স্থানীয় থানা পুলিশ ও ইজতেমা মেডিকেল টিম পৃথকভাবে অনুসন্ধান পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে।
আয়োজক কমিটি জানায়, মৃত্যুবরণকারী পাঁচজনই বিভিন্ন জেলা থেকে ইজতেমায় অংশ নিতে টঙ্গীতে এসেছিলেন। তারা হলেন—সিলেট সদর উপজেলার ভার্থখোলা এলাকার আব্দুল জহিরের ছেলে আবুল আসাদ বাদল (৬২), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কোট্টাপাড়া এলাকার নাজির উদ্দিনের ছেলে মইনউদ্দিন (১০০) ,জামালপুর সদর থানার কেন্দুয়া এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে আশরাফ আলী (৬০) ,জামালপুরের সরিষাবাড়ির বগারপাড়া গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. চাঁন মিয়া (৬০) ,নোয়াখালী সদর থানার আন্ডারচর কাজীর তালুক এলাকার সুলতান আহমদের ছেলে মো. নূর আলম (৮০)
মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে আয়োজক পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, শারীরিক অসুস্থতা, বয়সজনিত জটিলতা এবং ভিড়ের মধ্যে দীর্ঘসময় অবস্থান করাই এসব মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিটি মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
ইজতেমা মাঠের মেডিকেল টিমের সদস্যরা জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মুসল্লি মাঠে অবস্থান করছেন। শীতের শুরুতে রাতের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বয়স্ক মুসল্লিদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা বেড়েছে। জরুরি মেডিকেল সাপোর্টের জন্য মাঠে বিশেষ মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলসহ বিদেশ থেকেও মুসল্লিরা এ সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। ইজতেমায় দৈনিক বিভিন্ন ধর্মীয় বক্তব্য, নামাজ আদায় ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন পরিচালিত হচ্ছে।
আয়োজক কমিটি জানায়, আগামী মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের জোড় ইজতেমা। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মাঠে অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক, পুলিশ সদস্য এবং মেডিকেল কর্মী নিয়োজিত রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের মতে, বড় ধরনের কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। তবে মুসল্লিদের চলাচল ও অবস্থানের কারণে টঙ্গীর বিভিন্ন সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। ইজতেমা শেষে মৃত পাঁচ মুসল্লির মরদেহ তাদের নিজ নিজ এলাকায় পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। তাদের পরিবারের প্রতি তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ি নেজাম গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।
Leave a comment