যশোরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখতে এসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন পলাশ ধর (৪৫) নামে এক ব্যক্তি। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে । নিহত পলাশ ধর যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার মৃত অজিত ধরের ছেলে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং সহকারী হিসেবে কর্মরত সীমা ধর (৬৫) কর্মস্থল থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাসায় ফিরছিলেন। পথে চুড়ামনকাটি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষ এতটাই তীব্র ছিল যে অটোরিকশার সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং সীমা ধর গুরুতর আহত হন।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন দ্রুত সীমা ধরকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং পরে তাকে ভর্তি করা হয়।
খবর পেয়ে সীমা ধরের ছেলে পলাশ ধর দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসেন। মায়ের রক্তাক্ত ও গুরুতর অবস্থার দৃশ্য দেখে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মা–ছেলের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মায়ের শারীরিক অবস্থা দেখে পলাশ হঠাৎ মাথা ঘুরে মেঝেতে পড়ে যান।
তারপরই চিকিৎসকরা তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের প্রাথমিক পরীক্ষায় জানা যায়, পলাশ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, “মা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। খবর পেয়ে ছেলে পলাশ তাকে দেখতে আসেন। কিন্তু মায়ের ওই অবস্থার দৃশ্য দেখে তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি আর বেঁচে নেই। পরে জানা যায়, তিনি হৃদ্রোগে
আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন।” চিকিৎসকরাও একই তথ্য জানিয়েছেন।
পলাশ ধরের মৃত্যুতে শুধু তার পরিবার নয়, পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুর্ঘটনায় আহত মা সীমা ধর এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । ছেলের মৃত্যুর খবর তাকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ।
Leave a comment