পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় দাদনের টাকা পরিশোধ না করায় এক জেলেকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মিজানুর রহমান (৪৫)। বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের সাউদখালী গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত মিজানুর রহমান ওই গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন স্থানীয় মাঝি খালেক শেখ ও তার ছেলে মহারাজ শেখ। ঘটনার পর থেকেই দুজনেই পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে মিজানুর রহমান সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে মাঝি খালেক শেখের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাদন নেন। তবে অসুস্থতার কারণে তিনি মাছ ধরতে যেতে পারেননি, ফলে ধার করা টাকা পরিশোধও সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে খালেক শেখ একাধিকবার টাকা ফেরত চেয়েছিলেন বলে এলাকাবাসীর দাবি। কিন্তু মিজানুরের আর্থিক সংকটের কারণে তিনি অর্থ ফেরত দিতে পারেননি।
বুধবার দুপুরে দাদিশাশুড়ির মৃত্যুসংবাদে আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন মিজানুর রহমান। পথে মাঝি খালেক শেখ ও তার ছেলে মহারাজ তাকে আটক করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে সন্ধ্যার দিকে খালেক শেখ স্থানীয় পুলিশকে ফোন করে জানান,“মিজানুর আমার ঘরে বিষপান করে মারা গেছেন।”
কিন্তু নিহতের পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। নিহতের স্ত্রী শাহিনুর বেগম অভিযোগ করে বলেন,“আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে হত্যা করেছে খালেক ও তার ছেলে মহারাজ। পরে তারা নাটক সাজিয়েছে যে, আমার স্বামী বিষ খেয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, তার স্বামী শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন, কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। সামান্য ৫ হাজার টাকার জন্য এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি।স্থানীয় বাসিন্দারাও ঘটনার পর খালেকের বাড়িতে সন্দেহজনক তৎপরতা লক্ষ্য করেছেন বলে জানিয়েছেন। ইন্দুরকানী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রশান্ত বালা জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খালেক শেখের বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে মিজানুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
তিনি বলেন,“মৃতদেহটি বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা মর্গে পাঠানো হবে। তদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।” পুলিশ আরও জানায়, অভিযুক্ত খালেক শেখ ও তার ছেলে মহারাজ ঘটনার পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
Leave a comment