পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান সামিয়া সুলুহু হাসান বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। দেশটির নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, সামিয়া পেয়েছেন মোট ভোটের ৯৭.৬৬ শতাংশ।
তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও সহিংসতা নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা উঠেছে। প্রধান বিরোধী দল চাদেমা (CHADEMA) অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট সামিয়া তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের নির্বাচনে অংশ নিতে দেননি এবং নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে।
বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরই দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বড় শহরগুলোতে বিক্ষোভকারীরা রাজপথে নেমে আসে। তারা অভিযোগ করেন, ভোটের আগে ভয়ভীতি, দমন-পীড়ন এবং জালিয়াতি করা হয়েছে। অনেক এলাকায় বিক্ষোভকারীরা সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং সামিয়ার পোস্টার ও ব্যানার ধ্বংস করে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পুলিশ বিক্ষোভ দমনে টিয়ার গ্যাস এবং গুলি ব্যবহার করেছে। চাদেমা দল জানায়, ভোট–পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। তাদের দাবি, এটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বলেছে, নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী তানজানিয়ার তিনটি শহরে নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে সরকারি পক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ সাবিত কম্বো আল–জাজিরা বলেন, “নির্বাচন যথাযথভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা হয়নি। সরকারের কাছে কোনো বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর তথ্য নেই। চাদেমার যে ৭০০ জনের দাবি, আমরা এর কোনো প্রমাণ পাইনি।”
সামিয়া সুলুহু হাসান ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর তার স্থলাভিষিক্ত হন। এরপর থেকে তিনি দেশের নেতৃত্বে রয়েছেন । তবে বিরোধী দল ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ভোটে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের অংশগ্রহণ সীমিত হওয়া এবং ভোট–পরবর্তী সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা তৈরি করেছে। তানজানিয়ায় এ নির্বাচন শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং মানবাধিকার সংস্থার নজরেও রয়েছে।
সূত্র: আল–জাজিরা
Leave a comment