সুদানের দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহরে শনিবার (১১ অক্টোবর) র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) ড্রোন হামলা চালায়। স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হামলায় কমপক্ষে ৩০ জন নিহত এবং বহু আহত হয়েছেন।
শহরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থিত দার আল-আরকাম নামক বাস্তুচ্যুতদের শিবিরে হামলা করা হয়েছে। এল-ফাশারের প্রতিরোধ কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে অনেক মানুষের মরদেহ চাপা পড়ে আছে এবং এটি একটি গণহত্যার নজির। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানে আরএসএফ ও সরকারি সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। এ পর্যন্ত এই সংঘাতে ১০,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে রয়েছে।
দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার এখন যুদ্ধের কৌশলগত কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে আরএসএফ নিজের আধিপত্য সুসংহত করার চেষ্টা করছে। মানবাধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, শহরটি বর্তমানে ক্ষুধার্ত বেসামরিকদের জন্য উন্মুক্ত কবরস্থানে পরিণত হয়েছে।
আরএসএফের ১৮ মাসের অবরোধের মধ্যে এল-ফাশারের চার লাখের বেশি বেসামরিক নাগরিকের খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ফুরিয়ে গেছে। প্রায় সব পরিবারই পশুখাদ্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকছিল, তবে এখন তা পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় বাজারে এক বস্তা পশুখাদ্যের দাম কয়েকশ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
স্থানীয় প্রতিরোধ কমিটির অভিযোগ, খাবারের অভাবে শহরের বেশিরভাগ স্যুপ কিচেন বন্ধ হয়ে গেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি সতর্ক করেছেন যে, বেসামরিকদের জন্য এই অবস্থার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।
সুদানের এই হামলা ও মানবিক সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগের কারণ। মানবাধিকার সংস্থা ও স্থানীয় কমিটিগুলি বেসামরিকদের নিরাপত্তা ও ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছে।
Leave a comment