ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেবেন। ৮৯ বছর বয়সী এই নেতা ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও পশ্চিম তীরের অবৈধ দখল বিষয়ক অবস্থা তুলে ধরবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মাহমুদ আব্বাস এবং তার শীর্ষ সহযোগীদের নিউইয়র্ক সফরে বাধা আরোপ করায় তিনি সরাসরি অধিবেশনে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ তাদের বিপুল ভোটে আব্বাসকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ভাষণ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে মূলত পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, পশ্চিম তীরের অবৈধ দখল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানো হবে।
ভাষণের তিন দিন আগে ফ্রান্সের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সম্মেলনে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বুধবার জানান, ট্রাম্প পশ্চিম তীর দখল বিরোধিতায় তার সঙ্গে একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, “গতকাল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাকে যা বলেছেন তা হলো— ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের অবস্থান একই।”
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি কোনোভাবেই ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন হতে দেবেন না। এছাড়া তার মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থি সদস্যরা পশ্চিম তীর দখল করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, যাতে প্রকৃত স্বাধীনতার সম্ভাবনাও সীমিত হয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরাইলের এ ধরনের কৌশল এবং পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে যুদ্ধ শেষ করার জন্য ২১ দফা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি এই পরিকল্পনা ইসরাইলের উদ্বেগ যেমন সমাধান করবে, তেমনি পুরো অঞ্চলের প্রতিবেশীদের উদ্বেগও দূর করবে।”
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানান, ট্রাম্প চান এই সংঘাত ‘দ্রুত সমাপ্ত’ হোক। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে বর্তমান উত্তেজনা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে, তবে পার্থক্যপূর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ থাকায় পুরোপুরি সমাধান সম্ভব না-ও হতে পারে।
আব্বাসের ভিডিও ভাষণ ফিলিস্তিনের কূটনৈতিক উপস্থিতি শক্তিশালী করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের মানবাধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে অবস্থা তুলে ধরবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও ফ্রান্সের উদ্যোগে স্বীকৃতির মতো পদক্ষেপ ফিলিস্তিনের আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
Leave a comment