বাংলাদেশে গত ১১ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮৬ হাজার ৬৯০ জন মানুষ, আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৫৩ হাজারের বেশি। যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে শনিবার ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন যানজটে নষ্ট হচ্ছে ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা, যার আর্থিক ক্ষতি বছরে দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া যানজটের কারণে সংসার ভাঙার ঝুঁকি পর্যন্ত বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, দুর্ঘটনা ও যানজটের কারণে অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক কাঠামো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু পরিবহন খাতে দুর্নীতি ও ভুল নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। তারা নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নত গণপরিবহনকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
সভায় জানানো হয়, অধিকাংশ চালকের লাইসেন্স নেই, আবার অনেকেই মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালান। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর নজরদারি জরুরি। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাপ্রবণ বাঁক সোজা করে সড়ক সংস্কার না করলে প্রাণহানি কমবে না। বক্তারা অভিযোগ করেন, যাত্রীদের কাছ থেকে ইনস্যুরেন্সের টাকা নেওয়া হলেও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা কোনো সুবিধা পান না।
স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে আলোচনায় আরও বলা হয়, যানজট শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই করছে না, বরং নাগরিকদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এতে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও শ্বাসকষ্ট বাড়ছে, শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং কিশোরদের বিপথগামিতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বেকারত্ব ও দীর্ঘস্থায়ী যানজট।
সভায় আরও বক্তব্য দেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শরিফ রফিকুজ্জামান, গণ অধিকারের মুখপাত্র ফারুক খান, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার ও গণসংহতি আন্দোলনের দীপক রায়। তারা বলেন, যাত্রীদের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া স্থায়ী পরিবর্তন সম্ভব নয়।
Leave a comment