ভারতীয় পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ককে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে এক সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিতিভেনি লিগামামাদা রবুকা বলেন, “আপনার প্রতি কেউ খুশি নয়।” তবে একইসঙ্গে তিনি মোদিকে আশ্বস্ত করে বলেন, “আপনি যথেষ্ট শক্তিশালী। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সামলে নিতে পারবেন।”—খবর এনডিটিভির।
রবিবার তিন দিনের সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছান ফিজির প্রধানমন্ত্রী রবুকা। সফরে সমুদ্র নিরাপত্তা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়নসহ নানা খাতে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।
সোমবার মোদি ও রবুকার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনায় সই করে। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
নয়াদিল্লির সপ্রু হাউসে ভারতীয় পররাষ্ট্রবিষয়ক পরিষদ (আইসিডব্লিউএ) আয়োজিত ‘ওশান অব পিস’ শীর্ষক বক্তৃতা শেষে রবুকা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়— বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এই ধারণাটি কতটা সাড়া পাচ্ছে।
উত্তরে রবুকা জানান, তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এখনও ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হয়নি। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের আবেদন করেছেন। আর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “অনেক বড় দেশের নেতারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আমি পরিবারের উদাহরণ দিয়েছি। পরিবারের সবচেয়ে ছোট বা দুর্বল সদস্য অস্বস্তি প্রকাশ করলে সবাই মনোযোগ দেয়। কারণ বাইরের ঘটনাগুলো আমাদের ওপরও প্রভাব ফেলে।”
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনার মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর সঙ্গে রাশিয়া থেকে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানির কারণে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্কও যোগ হয়েছে। আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে কার্যকর হওয়া এ শুল্কের ফলে চিংড়ি, পোশাক, চামড়া, রত্ন ও গয়নার মতো শ্রমনির্ভর খাত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রবুকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটিই তার প্রথম ভারত সফর। বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সব খাত ছাড়াও আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা ইস্যুতে ব্যাপক ও ভবিষ্যতমুখী আলোচনা করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, রবুকার এ মন্তব্য একদিকে যেমন ভারতের কূটনৈতিক চাপে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর কণ্ঠস্বর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
Leave a comment