মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার পরপরই সেটিকে নিজের বড় বিজয় হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা “সম্পূর্ণ ধ্বংস” করে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুসহ ট্রাম্পের সমর্থকেরা এ সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ ও ‘চমৎকার’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে মার্কিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা ড্যান কেইন বলেছেন, হামলার পূর্ণ ফলাফল জানা এখনই খুব তাড়াতাড়ি হবে। ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়া বন্ধ করবে নাকি আরও ত্বরান্বিত করবে—তা সময়ই বলবে।
ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়ে, যখন দুই পরমাণু-সক্ষম রাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ ছাড়াই হামলা চালিয়েছে, যে দেশটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক টুলসি গ্যাবার্ড মার্চ মাসেই বলেছিলেন, তারা অস্ত্র বানাচ্ছে না। ইসরায়েল স্পষ্ট জানিয়েছে, তাদের হামলা চলতে থাকবে এবং তারা ‘শাসন পরিবর্তন’-এর দিকেও নজর দিচ্ছে। এর খেসারত দিচ্ছে শুধু ইরানি সরকার নয়, সাধারণ ইরানিরাও।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ হামলাকে মধ্যপ্রাচ্যে বিপর্যয় ডেকে আনার ঝুঁকি বলে উল্লেখ করে কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক আইনের আত্মরক্ষার নীতির আওতায়ও এই হামলা ন্যায্য নয় বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। সমালোচকেরা মনে করছেন, কূটনীতির পথ এড়িয়ে যুদ্ধ বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে এবং এমন এক দেশের অনুরোধে কাজ করেছে, যারা গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পূর্বসতর্কতামূলক হামলা বৈশ্বিক ব্যবস্থার ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি এমন বার্তা দিচ্ছে যে, যারা আলোচনায় বসে (যেমন ইরান) তারা কঠিন শাস্তি পাবে, আর যারা দ্রুত পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে (যেমন উত্তর কোরিয়া) তারা রেহাই পাবে। মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট হয়তো নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে, তবে এই বেপরোয়া পদক্ষেপের প্রকৃত মূল্য বিশ্বকে আরও বহু বছর ধরে গুনতে হতে পারে।
Leave a comment