শেষ ম্যাচটা পাকিস্তান জিতলেও সিরিজটা ছিল বাংলাদেশের। তবে পুরো সিরিজ জুড়ে পাওয়া অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা নিয়ে আশাবাদী পাকিস্তানের সাদা বল দলের কোচ মাইক হেসন। ঢাকায় সিরিজ শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে নিজের বিশ্লেষণ তুলে ধরে জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে তাঁর দল কী শিখেছে, কোথায় উন্নতি হয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য কী বার্তা মিলেছে।
মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মুখোমুখি হলো দুইটি আলাদা টি-টোয়েন্টি সিরিজে। মে মাসে লাহোরে তিন ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল পাকিস্তান, আর জুলাইয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সিরিজটি ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় বাংলাদেশ। ঢাকার শেষ ম্যাচে ৭৪ রানে জয়ের পর সিরিজ হারলেও একটা সন্তুষ্টির জায়গা খুঁজে পেয়েছে সফরকারীরা।
সিরিজের পর কোচ হেসন লিখেছেন, “বর্তমানে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম অবস্থানে থাকা দল হিসেবে আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে গভীরতা ও প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে এমন একটা ক্রিকেট স্টাইল অনুসরণ করতে হবে, যেটা আমাদের ধারাবাহিকতা এনে দেবে—বিশেষ করে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে।”
লাহোরে ব্যাটিং দাপটে এগিয়ে ছিল পাকিস্তান—প্রথম দুটি ম্যাচে ২০১ করে, আর তৃতীয় ম্যাচে রান তাড়া করে জেতে ১৬ বল হাতে রেখেই। অন্যদিকে ঢাকায় তাদের ব্যাটিং ভেঙে পড়ে: প্রথম ম্যাচে ১১০, দ্বিতীয় ম্যাচে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় দল। শেষ ম্যাচে ব্যাট হাতে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান, তোলে ১৭৮, যা জয়ে যথেষ্ট ছিল।
মিরপুরের উইকেটকে টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে হেসন বলেন, “এই ভিন্নধর্মী কন্ডিশন আমাদের ব্যাটারদের পরীক্ষা নিয়েছে। প্রথম সিরিজে আমাদের ব্যাটিং লাইনে তরুণরা ২০০+ রান তুলে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে। আর ঢাকায় ধীরগতির উইকেটে শেখার সুযোগ পেয়েছে তারা। অভিযোজনক্ষমতা এবং ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা দেখিয়েছে দল।”
কোচ হিসেবে হেসন সবচেয়ে বেশি খুশি দলের ফিল্ডিং নিয়ে। “শেষ দুটি ম্যাচে আমাদের ফিল্ডিং আন্তর্জাতিক মানের ছিল। খেলোয়াড়েরা এখন দ্রুত উন্নতি করছে, এবং ফিল্ডিংয়ে এমন উন্নতি আমাদের বড় টুর্নামেন্টে সুবিধা দেবে,” লিখেছেন হেসন।
সিরিজ শেষ হওয়ার পরদিনই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সালমান আগার নেতৃত্বাধীন টি–টোয়েন্টি দল খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের লডারহিলে, আর ওয়ানডে দলে নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু ৩১ জুলাই, ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে ৮ আগস্ট ত্রিনিদাদে।
ঢাকায় খেলা দল থেকে বাদ পড়েছেন সালমান মির্জা ও আব্বাস আফ্রিদি, দলে ফিরেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, যিনি বাংলাদেশ সিরিজে বিশ্রামে ছিলেন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়া এই অভিজ্ঞতাকে ভবিষ্যতের জন্য দিকনির্দেশনা বলেই দেখছেন হেসন। একই সঙ্গে তরুণদের পারফরম্যান্সে ভর করে গড়া ভবিষ্যতের দলের খসড়া কল্পনা করাও যেন শুরু হয়ে গেছে পাকিস্তানি শিবিরে।
Leave a comment