যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে হঠাৎ বন্যায় ১৫ শিশুসহ মারা গেছেন অন্তত ৪৩ জন। বেঁচে থাকা মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছেন শত শত উদ্ধারকর্মী। কের কাউন্টির শেরিফ ল্যারি লেইথা বলেছেন, ‘প্রত্যেককে না পাওয়া পর্যন্ত কাজ চলমান আছে ও চলবে।’
কাউন্টি কর্মকর্তারা জানান, নদীর কাছে ক্রিশ্চিয়ান ইয়্যুথ ক্যাম্প থেকে নিখোঁজ হওয়া ২৭টি শিশুকে পাওয়া যায়নি এখনো । সামাজিক মাধ্যমে বার্তা দিয়ে কিছু অভিভাবক তাদের শিশুদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৮৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে সপ্তাহের শেষে আরও কয়েকটি আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট বলেছেন, উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করতে একটি দুর্যোগ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, এ ঘটনার শিকার প্রতিটি ব্যক্তির অবস্থান খুঁজে পেতে কর্মকর্তারা বিরামহীন কাজ করে যাবেন।
তারা জানিয়েছেন, গুয়াডালুপে নদীর ওপর নিচে সবদিকেই উদ্ধারকারীরা যাবেন, যাতে করে কেউ যদি বন্যার পানিতে ভেসে যায় তাকেও যেন উদ্ধার করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, তার প্রশাসন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, উদ্ধার তৎপরতায় সহযোগিতার জন্য ফেডারেল সরকার কোস্ট গার্ড মোতায়েন করবে। ওদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, মধ্য টেক্সাসে সপ্তাহের শেষে আবারও বন্যা হতে পারে।
এতে করে ৫-১২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এর আগে ওই এলাকার মানুষ শুক্রবারের বৃষ্টির কারণেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ উদ্ধার কর্মীদেরই দৃষ্টি ছিল ক্যাম্প মিসটিক-এর দিকে।
টেক্সাস লেফটেন্যান্ট গভর্নর ডান প্যাট্টিক বিবিসি রেডিও ফোরের অনুষ্ঠানে বলেছেন- এখনো নিখোঁজ আছে ২৭ জন , তাদের অনেকেরই বয়স ১২ বছরের কম।
ক্যাম্পের যেসব ছবি এসেছে, তাতে এর ভয়াবহতা দেখা যাচ্ছে। কম্বল, ম্যাট্টেস, টেডি বিয়ারসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি কাদায় ভরে আছে। শুক্রবার নিকটবর্তী নদীর পানি যখন এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ২৬ ফুট উঁচু হয়ে গিয়েছিল, তখন তাদের অনেকেই ঘুমাচ্ছিল। ওই ক্যাম্পে ছিল প্রায় সাড়ে সাতশ জন। যারা মারা গেছে বা নিখোঁজ আছে, রোববার চার্চে তাদের জন্য প্রার্থনা হবে।
৪ জুলাইয়ের ছুটি উপলক্ষেও অনেকে এসেছিল ওই ক্যাম্পে। তাদেরও অনেকের খোঁজ নেই। ধ্বংস হয়ে গেছে লোরেনা গিলেনের বাড়ি ও রেস্তোরা। তিনি জানান, ২৮টি যানবাহনে করে লোকজন এসেছিলো ।
তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, পাঁচজনের একটি পরিবারের চিৎকার শুনতে পেয়েছেন তিনি। ‘তারা ভেসে যাচ্ছিল। তারা বাঁচার জন্য গাছ আঁকড়ে ধরেছিল। কিন্তু তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি উদ্ধারকারীরা।’
জোনাথন অ্যান্ড ব্রিটানি রোজাস, তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে ফাউন্ডেশন ছাড়া আর কিছু নেই।
বিবিসিকে তারা বলেছেন, একটি পরিবারের মা ও শিশু নিখোঁজ আছে।কাঁটাতারের সঙ্গে আটকে বেঁচে গেছে তাদের কিশোর ছেলে। আরেকজন অধিবাসীর নাম অ্যান্থনি। তাকে তার অ্যাপার্টমেন্টে কাদা ও ধ্বংসস্তুপের মধ্যে পাওয়া গেছে।
সূত্র: বিবিসি
Leave a comment